পরিযায়ী পাখি থেকে প্রজাপতি, হাঙর, নানা প্রজাতির পশুপাখি, কীটপতঙ্গের মধ্যে অনেক দূরত্ব পাড়ি দেওয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু তিমিমাছ? সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, হাম্পব্যাক তিমিমাছ নামে এক প্রজাতির একটি তিমিমাছ সঙ্গী ও খাবারের সন্ধানে তিন মহাসাগর পেরিয়ে ১৩ হাজার কিমি পথ পাড়ি দিয়েছে। এই প্রথম বার কোনো হাম্পব্যাক তিমিমাছের এতটা পথ পেরোনোর তথ্য হাতে এসেছে গবেষকদের। গবেষণা চালান একাটেরিনা কালাশনিকোভা নামে বাজারুটো সেন্টার ফর সায়েন্টিফিক স্টাডিজের গবেষক। গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে রয়্যাল সোসাইটি ওপেন সায়েন্স নামক জার্নালে।
২০১৩ সালে প্রশান্ত মহাসাগরের ওপর কলম্বিয়া উপকূলে ত্রিবুগা উপসাগরে একটি প্রাপ্তবয়স্ক হাম্পব্যাক তিমিমাছকে দেখা যায়। এর সঙ্গে আরও ৭টি হাম্পব্যাক তিমিমাছকে দেখা যায়। চার বছর পর ২০১৭ সালে একই হাম্পব্যাক তিমিমাছকে আগের ঘটনাস্থল থেকে ৭৮ কিমি দূরে প্রশান্ত মহাসাগরের ওপর কলম্বিয়া উপকূলে বাহিয়া সোলানো দ্বীপের কাছে দেখা যায়।
পাঁচ বছর পর ২০২২ সালে ওই তিমিমাছটিকে দেখা যায় ভারত মহাসাগরে জাঞ্জিবার উপকূলের কাছে। প্রথম যেখানে দেখা যায় তিমিমাছকে সেখান থেকে ১৩ হাজার কিমি দূরে। জাঞ্জিবার আর কলম্বিয়ার মধ্যে দূরত্ব ১৩,০৪৬ কিমি।
সাধারণত ট্রপিকাল ব্রিডিং গ্রাউন্ড থেকে ঠান্ডা ফিডিং গ্রাউন্ডে পাড়ি দেওয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায় হাম্পব্যাক তিমিমাছের মধ্যে। হাম্পব্যাক তিমিমাছ সাধারণত উত্তর থেকে দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ থেকে উত্তরে যায়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে হাম্পব্যাক তিমিমাছ পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে এক মহাসাগর থেকে অন্য মহাসাগরে পাড়ি দিয়েছে। গবেষকদের মতে, জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে তিমিমাছের প্রধান খাদ্য ক্রিলের দল অত দূরে চলে গেছে। তাই সম্ভবত খাবারের সন্ধানে অত দূরে পাড়ি দিয়েছে তিমিমাছ। দ্বিতীয় কারণ সম্ভবত সঙ্গীর খোঁজে অত দূরে পাড়ি দিয়েছে তিমিমাছ।