দক্ষিণ-পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সলোমন দ্বীপে বিশ্বের সবচেয়ে বড়ো আকারের কোরাল তথা প্রবাল প্রাচীরের খোঁজ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এর আকার বিশ্বের সবচেয়ে বড়ো স্তন্যপায়ী প্রাণী নীল তিমির চেয়েও বড়ো। দেখা যায় মহাকাশ থেকেও। বিজ্ঞানীদের মতে, নবাবিষ্কৃত এই বিশাল প্রবালপ্রাচীরের বয়স ৩০০ বছরের বেশি। সম্প্রতি এ কথা ঘোষণা করেন বিজ্ঞানীরা।
ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক চ্যানেলের হয়ে প্রশান্ত মহাসাগরের প্রত্যন্ত অঞ্চলে অভিযান চালান মেরিন বায়োলজিস্ট মানু সান ফেলিক্স। তখনই তিনি ওই প্রত্যন্ত সামুদ্রিক অঞ্চলে বিশাল প্রবাল প্রাচীরের খোঁজ পান। আকারের জন্য ওই প্রবাল প্রাচীরকে ফেলিক্স ‘ডুবন্ত ক্যাথিড্রাল’ বলে বর্ণনা করেছেন।
সমুদ্রের জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে প্রবালপ্রাচীর। এদের বলা হয় ‘সমুদ্রের রেনফরেস্ট’। সৈকতকে ক্ষয় থেকে রক্ষা করে পাশাপাশি অসংখ্য সামুদ্রিক প্রাণীর জীবনরক্ষা করে থাকে প্রবালপ্রাচীর। পর্যটন ও মাছচাষে সাহায্য করে বলে প্রবালপ্রাচীর ১০০ কোটির বেশি মানুষের জীবনযাপনেও সহায়তা করে থাকে। যদিও ইদানীং জলবায়ুর পরিবর্তনের সরাসরি প্রভাব পড়ছে প্রবালপ্রাচীরের ওপর।
নানান রকম যন্ত্রপাতির সাহায্যে বিজ্ঞানীরা সলোমন দ্বীপের প্রবালপ্রাচীরের আয়তন মেপে দেখেন। এটি ১১২ ফুট চওড়া, ১০৫ ফুট লম্বা আর ১৮ ফুট উঁচু। একাধিক প্রবাল কলোনি মিলে তৈরি হয় প্রবালপ্রাচীর। নয়া আবিষ্কৃত প্রবালপ্রাচীর ‘পাভোনা ক্লাভাস’ (Pavona clavus) প্রজাতির।
খাবারের জন্য চিংড়িমাছ-সহ বিভিন্ন ধরনের মাছ ও সামুদ্রিক কাঁকড়া এই প্রবালপ্রাচীরের ওপর নির্ভরশীল। সলোমন দ্বীপে ৪৯০ রকম প্রজাতির ছোটোবড়ো প্রবালপ্রাচীর রয়েছে। সলোমন দ্বীপের থ্রি সিস্টার নামক অঞ্চলে দেখা মিলেছে নতুন আবিষ্কৃত প্রবালপ্রাচীরের। অস্ট্রেলিয়ার গ্রেট বেরিয়ার রিফে প্রবালপ্রাচীর দেখা মেলে। এর আগে আমেরিকান সামোয়া দ্বীপের কাছে খোঁজ মিলেছিল ‘বিগ মোম্মা’ নামক বিশাল আকারের প্রবালপ্রাচীরের। নতুন প্রবালপ্রাচীরের আয়তন সেটির চেয়ে ৩ গুণ বেশি।