ভাদ্র মাসে কখনো চড়া রোদ, ভ্যাপসা গরম আবার কখনো ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি হচ্ছে। এসময় হল সংক্রমণের আদর্শ সময়। যে কোনো ঋতু বদলের সময় শরীর অসুস্থ হয়ে পড়ে খুব তাড়াতাড়ি। কারণ বদলাতে থাকা আবহাওয়ার সঙ্গে অত তাড়াতাড়ি খাপ খাওয়াতে পারে না আমাদের শরীর। সামঞ্জস্য গড়ে তুলতে না পারার কারণে শারীরিক নানান রকম সমস্যা হয়। বিশেষ করে ঠান্ডা লাগা, গলা ব্যথা, সর্দিকাশি, জ্বর, হাঁচির সমস্যায় ভুগছেন আট থেকে আশি সবাই। এমন পরিস্থিতিতে কয়েকটি ঘরোয়া টোটকা অনুসরণ করলেই উপকার পাওয়া যায়।
মধু: মধু গলার জন্য খুবই ভালো। এটা গলা ব্যথা, কাশির থেকে তাৎক্ষণিক স্বস্তি দেয়। মধু কাশি কমাতে সাহায্য করে। সরাসরিও মধু খেতে পারেন। নয় তো গরম চা বা গরম জলে মিশিয়ে মধু খেতে পারেন। মধুর অ্যান্টি-ইনফ্লেমটরি, অ্যান্টি-ব্যাক্টরিয়াল ও অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট গুণ আছে। মধু, গোল মরিচ আর আদার রসের মিশ্রণ গলা ব্যথা সারায়। এছাড়া কাশি কমাতে দুধ-মধু কাজে দেয়। এক তৃতীয়াংশ দুধের সঙ্গে ২ চামচ মধু মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
নুন জলের গার্গেল: এটা একটা সহজ প্রতিকার যা গলা ব্যথা, গলা খুসখুস করা, শুকনো কাশি থেকে মুক্তি দেয়। ঈষদুষ্ণ গরম জলে এক চিমটে নুন মিশিয়ে কমপক্ষে ৫ মিনিট ধরে গার্গেল করুন।
তুলসীপাতা: তুলসীপাতা কাশি সারানোর অব্যর্থ ওষুধ। ফুটন্ত জলে কয়েকটি তুলসীপাতা ফেলে বাষ্প নিলে যেমন উপশম মেলে তেমনই চা ও হালকা গরম জলের সঙ্গেও তুলসীপাতা ফুটিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
দারুচিনি ও লবঙ্গ: এক গ্লাস জলের সঙ্গে দারুচিনির টুকরো, ৩টি লবঙ্গ, এক চামচ জোয়ান, এক চামচ আদা বাটা, অর্ধেক চামচ হলুদ, গোলমরিচ গুঁড়ো অথবা গোটা গোলমরিচ মিশিয়ে ভালো করে ফুটিয়ে খান।
হলুদ, দুধ আর ঘি: হলুদের অ্যান্টি- ইনফ্লেমাটরি আর অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল গুণ রয়েছে। দুধের মধ্যে হলুদের টুকরো আর ঘি মিশিয়ে খেলে ঠান্ডা লাগা ও সাধারণ জ্বর থেকে মুক্তি মেলে। গলা ব্যথা আর কাশিতে হলুদ খুবই উপকারী। গলা পরিষ্কার রাখতে দিনে ২ বার হলুদ বাটা মেশানো হালকা গরম জল খেলে উপকার মেলে।
আদা: আদার রসে অ্যান্টি-ইনফ্লেমাটরি গুণ আছে। তাই গলা পরিষ্কার রাখতে ও কফের কারণে সৃষ্টি হওয়া কাশি থেকে মুক্তি পেতে চা বা জলের সঙ্গে আদা ফুটিয়ে খান। আদা গলা শিথিল করে, তাৎক্ষণিক ভাবে কাশি কমায়। এছাড়া ফুটন্ত জলে আদা, লবঙ্গ, গোটা গোলমরিচ, গুড় আর তুলসীপাতা ফেলে দিন। বেশ কিছুক্ষণ ফোটানোর পর চায়ের মতো পান করুন।
পাতিলেবু: সর্দিকাশির সংক্রমণ কমাতে খুবই উপকারী ভিটামিন সি সমৃদ্ধ পাতিলেবু। কাশি কমাতে অন্যতম প্রচলিত প্রাকৃতিক চিকিৎসা হল লেবু খাওয়া। লেবুর রস কফকে পাতলা করে বের করে দিতে সাহায্য করে। দ্রুত কাশি কমাতে একটা সতেজ পাতিলেবুকে নুন আর গোলমরিচ মিশিয়ে খান।
গোলমরিচের চা: গোলমরিচ কফ যুক্ত কাশি কমাতে সাহায্য করে। এক কাপ চায়ের সঙ্গে এক চা চামচ গোলমরিচের গুঁড়ো আর ২ টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে ছেঁকে খান। কফ যুক্ত কাশিতে এটা খুব ভালো কাজ করে। চাইনিজ মেডিসিনেও কাশি কমাতে গোলমরিচের চা ব্যবহার করা হয়।
আরও পড়ুন: বাড়ির দেওয়ালে ড্যাম্প? অসুস্থ করে তুলতে পারে স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ