মৌ বসু
চিকিৎসাশাস্ত্রের এত উন্নতি সত্ত্বেও এখনও বিশ্বের প্রায় প্রতিটি জায়গায় বেশির ভাগ মানুষের মৃত্যুর অন্যতম কারণ হল আচমকা হার্ট অ্যাটাক। এবার বাড়িতে বসেই খুব সহজে মাত্র ৫ মিনিটের মধ্যে বোঝা যাবে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি রয়েছে কি না। সুইডেনের একদল গবেষক এই সহজ পন্থা আবিষ্কার করেছেন। তাঁদের গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের (American Heart Association) জার্নালে।
সুইডেনের ইউনিভার্সিটি অফ গোথেনবুর্গের সাহলগ্রেন্সকা আকাদেমির (Sahlgrenska Academy) ক্লিনিক্যাল ফিজিওলজির অধ্যাপক গোরান বার্গস্ট্রম জানান, হার্ট অ্যাটাক বলে কয়ে আসে না। অনেক সময়েই দেখা যায় আপাতদৃষ্টিতে সুস্থ মানুষের হার্ট অ্যাটাক হচ্ছে। আগে থেকে হৃদযন্ত্রের অসুখের কোনো ইঙ্গিত না থাকলেও করোনারি আর্টেরি বা হৃদযন্ত্রের ধমনীতে ফ্যাট জমা হয়েছে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় একে বলে ‘অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস’ (atherosclerosis)।
বার্গস্ট্রমের কথায়, “আমাদের আবিষ্কৃত সহজ পরীক্ষার মাধ্যমে ৫০ থেকে ৬৪ বছর বয়সি ব্যক্তিদের মধ্যে খুব সহজেই বোঝা যাবে কারা ‘করোনারি অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস’ (coronary atherosclerosis) অসুখে ভুগছেন। কাদের হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি রয়েছে। বয়স, লিঙ্গ, ওজন, কোমরের মাপ, ধূমপানের অভ্যাস, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা, ডায়াবেটিস, পরিবারে হার্টের অসুখের ইতিহাস সংক্রান্ত ১৪ রকম প্রশ্ন করা হবে। উত্তরের সঙ্গে বিশেষ গাণিতিক সংকেত বা অ্যালগোরিদম মিলিয়ে দেখা হবে। ‘সেলফ রিপোর্ট টুল’ (Self Report Tool) হার্ট অ্যাটাকের প্রিস্ক্রিনিং টুল হিসাবে কাজ করবে। হার্ট অ্যাটাক বিশেষ করে ইসকেমিক স্ট্রোকের ঝুঁকি রয়েছে কি না তা জানা যাবে।
সুইডিশ গবেষকদের মতোই ফিনল্যান্ডের টাম্পেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষকও হৃৎস্পন্দনের হারের সঙ্গে হার্ট অ্যাটাকের সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছেন। সায়েন্স অ্যালার্ট (Science Alert) নামক জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়েছে, ডিট্রেন্ডেড ফ্লাকচুয়েশন অ্যানালিসিস (detrended fluctuation analysis) বা মেট্রিক পদ্ধতির মাধ্যমে নয়া অ্যালগোরিদম বের করা হয়েছে। এই পদ্ধতিতে সময় অনুসারে হৃৎস্পন্দনের হার মেপে দেখা হয়। ৮ বছরের বেশি সময় ধরে ২৭৯৪ মানুষের ওপর গবেষণা চালানো হয়।
আরও পড়ুন
রাতে বেশিক্ষণ উজ্জ্বল আলোর মধ্যে থাকা বাড়িয়ে তোলে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা