Home শরীরস্বাস্থ্য প্লাস্টিকের বোতলে জল খাচ্ছেন? অজান্তেই কী বিপদ ডেকে আনছেন জানেন?

প্লাস্টিকের বোতলে জল খাচ্ছেন? অজান্তেই কী বিপদ ডেকে আনছেন জানেন?

0

অসুখ করলে ডাক্তারের পরামর্শ মেনে আমরা অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খেয়ে থাকি। কিন্তু ইদানীং অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিক খেলেও অসুখ সারতে দেরি হচ্ছে। কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের অধীনস্থ স্বশাসিত সংস্থা পঞ্জাবের মোহালির ইনস্টিটিউট অফ ন্যানো সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (আইএনএসটি) এর বিজ্ঞানীরা তাঁদের গবেষণায় প্রমাণ পেয়েছেন, সিঙ্গল ইউজ প্লাস্টিকের বোতল থেকে ন্যানোপ্লাস্টিকের কণা মানুষের শরীরে ঢুকছে। যার ফলে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিজট্যান্ট অর্থাৎ অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধক্ষমতা তৈরি হচ্ছে। ফলে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ প্রত্যাশামতো কাজ দিচ্ছে না। ন্যানোস্কেল (Nanoscale) নামক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে এই গবেষণা রিপোর্ট। 

মানবশরীরের পাশাপাশি পরিবেশে ন্যানোপ্লাস্টিক ও মাইক্রোঅর্গানিজমরা উপস্থিত থাকে। গবেষকদের গবেষণার বিষয় ছিল কী ভাবে তা মানুষের স্বাস্থ্যর ওপর প্রভাব ফেলে। ইনস্টিটিউট অফ ন্যানো সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (আইএনএসটি) গবেষক মণীশ সিং ও তাঁর গবেষকদল পরীক্ষা করে দেখেন কী ভাবে ন্যানোপ্লাস্টিকের কণা ব্যাক্টেরিয়ার কাজকর্মকে প্রভাবিত করে। এ ক্ষেত্রে তাঁরা জোর দিয়েছিলেন মানুষের অন্ত্রে থাকা ল্যাক্টোবেসিলাস অ্যাসিডঅফিলাস (Lactobacillus acidophilus) ব্যাক্টেরিয়ার ওপর। ন্যানোপ্লাস্টিক ভালো ব্যাক্টেরিয়াকে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিজট্যান্ট জিনের বহনকারী হিসাবে ব্যবহার করতে পারে কি না ও মানুষের স্বাস্থ্যর ওপর কী প্রভাব ফেলে তা দেখাই ছিল গবেষকদের আসল উদ্দেশ্য। তাঁরা ব্যবহার করেন প্লাস্টিকের জলের বোতল।

বোতলে থাকা পলি-ইথিলিন টেরেফথ্যালেট ন্যানোপ্লাস্টিক ‘ই-কলাই ব্যাক্টেরিয়া’র জিন ল্যাক্টোব্যাসিলাস অ্যাসিডোফাইলাস ব্যাক্টেরিয়ার শরীরে বহন করে নিয়ে যায়। এই জিনবহনের প্রক্রিয়াকে বলা হয় হরাইজন্টাল জিন ট্রান্সফার। দু’টি পদ্ধতিতে পলি-ইথিলিন টেরেফথ্যালেট ন্যানোপ্লাস্টিক এই জিনবহনের প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে।

প্রথম পদ্ধতিতে, পলি-ইথিলিন টেরেফথ্যালেট ন্যানোপ্লাস্টিক সরাসরি ব্যাক্টেরিয়ার স্তর ভেদ করে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী জিনকে বহন করে নিয়ে যাওয়ার পথ প্রশস্ত করে। দ্বিতীয় পদ্ধতিতে আউটার মেমব্রেন ভেসিকলসের ব্যাক্টেরিয়াল সিক্রিশনের মাধ্যমে জিন ট্রান্সফারের পথ তৈরি করা হয়। ন্যানোপ্লাস্টিক এ ক্ষেত্রে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস তৈরি করে ব্যাক্টেরিয়ার ওপরের স্তরে থাকা জিনকে প্রভাবিত করে ছিদ্র তৈরি করে। আউটার মেমব্রেন ভেসিকলসের ব্যাক্টেরিয়াল সিক্রিশনের মাত্রা বেড়ে যায়। অনেক ক্ষেত্রে আলাদা আলাদা প্রজাতির ব্যাক্টেরিয়ার মধ্যেও অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী জিন ট্রান্সফার হয়।

গবেষণায় বলা হয়েছে, ন্যানোপ্লাস্টিক অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধকারী জিনের সঙ্গে উপকারী ব্যাক্টেরিয়ার পরিচয় করিয়ে দেয়। তার পর ওই উপকারী ব্যাক্টেরিয়াই অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধকারী জিনের রিজার্ভর হিসাবে কাজ করে। সংক্রমণের সময় এ সব জিনকেই উপকারী ব্যাক্টেরিয়া বহন করে নিয়ে যায় প্যাথোজেনিক বা সংক্রমণকারী ব্যাক্টেরিয়ার কাছে। ফলে সংক্রমণের সময় অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধে আর জব্দ হয় না সংক্রমণকারী ব্যাক্টেরিয়া। তাই বিজ্ঞানীরা ন্যানোপ্লাস্টিক ব্যবহার কমানোর ওপর জোর দিয়েছেন।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version