সুস্বাস্থ্য আর ভালো ঘুমের জন্য বাঁদিকে ফিরে ঘুমোনো যে খুবই উপকারি তা বিদেশি তত্ত্ব নয় সেটা জানা গেছে প্রাচীন আর্য়ূবেদ শাস্ত্র থেকেই। আর্য়ূবেদ শাস্ত্রেই প্রথম বাঁদিক ফিরে শোয়ার উপকারিতার কথা বলা হয়। আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে গবেষণাতেও এই চিন্তাভাবনাকে মান্যতা দেওয়া হয়েছে। ২০১০ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, বাঁদিকের চেয়ে ডানদিক ফিরে শোওয়ার কারণে বুকজ্বালা, বদহজমের সমস্যা দারুণ ভাবে বেড়ে গেছে। গবেষকরা জানান, আমরা বাঁদিক ফিরে ঘুমোলে ঘুমোনোর সময় পাকস্থলী আর গ্যাস্ট্রিক জুস ইসোফেগাসের নিচে থাকে। বাঁদিকে থাকে পাকস্থলী। আর্য়ুবেদে বলা হয় দুপুরে খাওয়ার পর মিনিট দশেক বাঁদিক ফিরে শুলে ভালো ভাবে খাবার হজম হয় আর শক্তিও ফেরে। প্রচুর খেলে শরীরে আঁইঢাঁই হলে বদহজম হলেও এভাবে উপশম মেলে।
অনেকেরই ঘুমের সময় নাক ডাকার বিভৎস সমস্যা থাকে। নাক ডাকার সমস্যার কারণে হার্টের ওপর চাপ পড়ে। তেমনই যিনি নাক ডাকছেন তাঁর পাশে যিনি শুচ্ছেন তাঁরও ঘুমের দফারফা হচ্ছে। বাঁদিক ফিরে শুলে নাক ডাকার আর স্লিপ অ্যাপনিয়ার সমস্যা কমায়।
আমরা যে খাবার খাই তা পুরোটাই হজম হয় না। না হজম হওয়া খাবার ক্ষুদ্রান্ত্র আইলিওকেকাল (Ileocecal) ভালভের মাধ্যমে বৃহদান্ত্রে পাঠিয়ে দেয়। লোয়ার রাইট অ্যাবডোমেন বা তলপেটে থাকে এই আইলিওকেকাল ভালভ। তাই বাঁদিক ফিরে শুয়ে ঘুমোলে ভালো ভাবে খাবার হজম হয়।
এছাড়াও, গবেষণায় দেখা গেছে, বাঁদিক ফিরে ঘুমোলে আমাদের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ে। অ্যালঝাইমার্স, পার্কিনসনস, স্নায়ুরোগের সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমে।
দ্য জার্নাল অফ ক্লিনিক্যাল গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজির একটি প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়েছে, আমাদের শরীরের বাঁদিকে আছে পাকস্থলী। তাই বাঁদিক ফিরে শুলে অ্যাসিডিটি কমে।
ডাক্তাররা অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের হৃদযন্ত্রের রক্ত সঞ্চালনা বাড়ানোর জন্য বাঁদিক ফিরে শোওয়ার পরামর্শ দেন। শুধু অন্তঃসত্ত্বা নয় সবাইকেই হার্টের ওপর চাপ কমানোর জন্য বাঁদিক ফিরে শোওয়ার পরামর্শ দেন ডাক্তাররা। কেন না বাঁদিকে ফিরে ঘুমোলে অভিকর্ষ বলের কারণে হার্টের দিকে লিন্ফ ড্রেনেজ যায় আর অ্যাওর্টিক সার্কুলেশনকে হার্টের থেকে দূরে সরিয়ে রাখে।
আরও পড়তে পারেন
ধূমপান না করলেও বাড়ছে ফুসফুসের ক্যানসারের ঝুঁকি! দায়ী পাঁউরুটি, ইনস্ট্যান্ট নুডলস, সোডা?