Home শরীরস্বাস্থ্য কলকাতায় বাড়ছে ‘থান্ডারস্টর্ম অ্যাজমা’র দাপট! হঠাৎ আবহাওয়া বদলে শ্বাসকষ্টে ভুগছেন বহু মানুষ

কলকাতায় বাড়ছে ‘থান্ডারস্টর্ম অ্যাজমা’র দাপট! হঠাৎ আবহাওয়া বদলে শ্বাসকষ্টে ভুগছেন বহু মানুষ

Thunderstorm Asthma
ছবি এআই তৈরি করেছে

কলকাতায় বারবার আবহাওয়ার বদলের জেরে বেড়ে চলেছে শ্বাসকষ্টজনিত অসুস্থতা। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সম্প্রতি ‘থান্ডারস্টর্ম অ্যাজমা’ বা ঝড়বৃষ্টিজনিত হাঁপানির প্রভাব দেখা যাচ্ছে বহু রোগীর মধ্যে। একদিকে গরম-ঠান্ডার পালা, অন্যদিকে বাতাসের আর্দ্রতা ও বৃষ্টির সঙ্গে আসা হাওয়ায় হাঁপানি ও সিওপিডি রোগীদের অবস্থা আরও জটিল হচ্ছে।

সিএমআরআই হাসপাতালের পালমোনোলজিস্ট অরূপ হালদার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “ঝড়-বৃষ্টির সময় পরাগরেণু বা পলেনে পানি জমে তা ফেটে ক্ষুদ্র কণায় ভেঙে যায়। বাতাসের সঙ্গে এই কণা আমাদের ফুসফুসে গভীর পর্যন্ত পৌঁছে যায়। সাধারণত যাঁদের হে ফিভার বা অ্যালার্জিক রাইনাইটিস আছে, তাঁরা এতে বেশি আক্রান্ত হন। এর সঙ্গে ভাইরাস সংক্রমণ বাড়ছে, আর বাতাসে সালফার ডাই-অক্সাইড, নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইডের মতো গ্যাস জমছে। তাছাড়া বর্ষায় ভিটামিন ডি-র মাত্রা কমে গিয়ে প্রাকৃতিক প্রতিরোধ ক্ষমতাও হ্রাস পাচ্ছে।”

চার্নক হাসপাতালের পালমোনোলজিস্ট সৌম্য সেনগুপ্ত বলেন, “অতিরিক্ত গরমে শরীর ডিহাইড্রেটেড হয়, শ্লেষ্মা ঘন হয়ে যায়। আবার ঠান্ডা বাতাসে শ্বাসনালীর প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং শ্লেষ্মা বাড়ে। এর ফলে কাশি, শ্বাসকষ্ট এবং হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। তাপমাত্রার ওঠানামায় শ্বাসনালীর ঘন ঘন সংকোচন হচ্ছে। ক্রমাগত বৃষ্টিতে ইনফ্লুয়েঞ্জা এ ও এএইচ৩ ভাইরাসে সংক্রমণ বাড়ছে।”

উডল্যান্ডস হাসপাতালের ক্লিনিকাল মাইক্রোবায়োলজিস্ট দীপনারায়ণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “ঠান্ডা ও শুষ্ক বাতাসও ফুসফুসকে উত্তেজিত করে। এই দ্রুত আবহাওয়ার পরিবর্তন সরাসরি শ্বাসনালী ও বাতাসের মানকে প্রভাবিত করছে। এর সঙ্গে আর্দ্রতা এবং মাঝে মাঝে বৃষ্টি শ্বাসকষ্ট আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।”

বিপি পোদ্দার হাসপাতালের পালমোনোলজিস্ট অভিষেক কল্য জানান, বাইরে থেকে গরম পরিবেশ থেকে হঠাৎ ঠান্ডা এয়ারকন্ডিশন্ড ঘরে ঢোকা বা মৌসুমি পরিবর্তন ফুসফুসে বড় চাপ তৈরি করছে।

পিয়ারলেস হাসপাতালে সম্প্রতি ইনফ্লুয়েঞ্জা এ ও বি, রাইনোভাইরাস, মেটা-পনিউমোভাইরাসের পাশাপাশি ডেঙ্গি ও চিকুনগুনিয়া রোগীর নমুনা মিলেছে। হাসপাতালের চিফ মাইক্রোবায়োলজিস্ট ভাস্কর নারায়ণ চৌধুরী বলেন, “তাপমাত্রার এই ওঠানামা শ্বাসজনিত ভাইরাসের আয়ুষ্কাল বাড়িয়ে দিচ্ছে। ইনফ্লুয়েঞ্জা উষ্ণ আবহাওয়াতেও আঘাত হানতে পারে।”

চিকিৎসকরা সতর্ক করেছেন, হাঁপানি ও ফুসফুসের রোগীরা এই সময়ে বিশেষভাবে সাবধানে থাকুন। বাড়তি সুরক্ষার জন্য ধুলো, পোলেন ও হঠাৎ আবহাওয়ার পরিবর্তন এড়াতে মাস্ক ব্যবহার ও পর্যাপ্ত জলপান জরুরি।

আরও পড়ুন: ভাদ্রের সর্দিকাশি-জ্বরে ঘরোয়া টোটকা: মধু থেকে পাতিলেবুতে মিলবে স্বস্তি

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version