এ বছর বিশ্ব ঘুম দিবস পালিত হল ১৪ মার্চ। বেশ সাড়ম্বরেই পালিত হল দিনটি। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, সবই আসলে খাতায়কলমে পালন করার ঢক্কানিনাদ। আসলে, রাতে অনেক দেরিতে ঘুমোতে যাচ্ছেন ভারতীয়রা। অধিকাংশ প্রাপ্তবয়স্ক ভারতীয় রাতে কম ঘুমোচ্ছেন। Wakefit’s Great Indian Sleep Scorecard 2025 শীর্ষক সমীক্ষা রিপোর্টে উঠে এসেছে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য।
২০২৪ সালের মার্চ থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গোটা দেশে সাড়ে ৪ হাজার বিভিন্ন বয়সের মানুষের ওপর গবেষণা চালানো হয়। তাতেই দেখা গেছে, নানান রকম কারণে কম ঘুমোচ্ছেন ভারতীয়রা। তার প্রভাব শরীর ও মনের ওপর পড়ছে।
সমীক্ষায় দেখা গেছে, ৫৫% ভারতীয় মাঝরাতে ঘুমোতে যান। এই প্রবণতা ক্রমশ বাড়ছে। ২০২২ সালে মাঝরাতে ঘুমোতে যাওয়ার সংখ্যা ছিল ৪৬%। ২০২৩ সালে সেটাই বেড়ে হয় ৫২%। সাধারণত ৬-৭ ঘণ্টা ঘুমোনোর কথা বলা হলেও অন্তত ৪০% ভারতীয় দিনে ৬ ঘণ্টার কম ঘুমোচ্ছেন।
কেন এত কম ঘুমোচ্ছেন ভারতীয়রা?
সমীক্ষায় দেখা গেছে, রাতে ঘুমোনোর আগে ৬৫% ভারতীয় ফোন ঘাঁটাঘাঁটি করেন। স্ক্রিনের চড়া নীল আলোয় মেলাটোনিন হরমোনের নিঃসরণে ব্যাঘাত ঘটে। ফলে ঘুমোতে অসুবিধা হয়। ৪৫% ভারতীয় জানান, কাজের চাপ, দীর্ঘ সময় ধরে একটানা অফিসে কাজ, আবার বাড়ি ফিরেও কাজ করতে বাধ্য হওয়ার কারণে রাতে ঠিকমতো ঘুম হয় না। ৪২% ভারতীয় জানান, রাতে টিভিতে হওয়া অনুষ্ঠান, মোবাইলে দেখা ওটিটি, ভিডিও গেম খেলার কারণে ঘুমে বিঘ্ন ঘটে। বেশির ভাগ ভারতীয় জানান, সপ্তাহে ঘুম কম হলেও ছুটির দিন তারা ঘুমিয়ে কাটিয়ে সেটা পুষিয়ে দেন। তবে অনিয়মিত ঘুমের প্যাটার্নের কারণে দীর্ঘ মেয়াদে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে।
রাত ১০টাকে ঘুমের আদর্শ সময় ধরা হয়েছে। সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ৭২.৮% কলকাতাবাসী, ৫৫% চেন্নাইবাসী ও ৫৫% হায়দরাবাদবাসী রাত ১১টার পর ঘুমোতে যান। দেশের ৫৮% মানুষ রাত ১১টার পর ঘুমোতে যান। ৪৪% মানুষ পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়ার কারণে সকালে ঘুম থেকে উঠেও ক্লান্তি অনুভব করেন। ৩৫% মানুষের রাতে বারবার ঘুম ভেঙে যায় ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে। ৪২% পুরুষ ও ৫০% মহিলা সকালে ঘুম থেকে উঠে ক্লান্ত অনুভব করেন। রাতে বারবার ঘুম ভেঙে যায় ১৩% মহিলার ও ৯% পুরুষের।
রাতে পর্যাপ্ত ঘুম না হলে স্থুলতার সমস্যা দেখা যায়। ওজন নিয়ন্ত্রণে না থাকলে ডায়াবেটিস, স্ট্রোক, হার্টের অসুখে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। মনমেজাজ ভালো থাকে না। মানসিক উদ্বেগ ও অবসাদ দেখা যায়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।