উমার বিদায়পর্ব সাঙ্গ হতেই বাংলার আকাশে-বাতাসে এখন বিষাদের সুর। বাঙালির এখন মনকেমনের পালা শুরু। রোজকার রোজনামচায় ফেরার সঙ্গে সঙ্গে পরের পুজোর জন্য দিন গোনা শুরু। কিন্তু বাঙালির তো বারো মাসে তেরো পার্বণ। তাই দুর্গাপুজো মিটতেই বাঙালির ঘরে ঘরে শুরু হয়ে যায় ধনদেবী মা লক্ষ্মীর পুজোর আয়োজন। নিয়মনিষ্ঠা মেনে লক্ষ্মীপুজোর দিন উপোসও করা হয়ে থাকে। উপোসকে পবিত্র বলে মানা হয়। সাময়িক উপোসকে স্বাস্থ্যকর বলেও বিবেচনা করা হয়।
উপোস করলে কোন কোন বিষয়ে নজর রাখবেন
চিকিৎসকদের পরামর্শ হল উপোস করলেও একেবারে খালি পেটে থাকবেন না। বারবার জলের পাশাপাশি টক দইয়ের ঘোল, শরবত, টাটকা ফলের রস, লেবুর শরবত, ডাবের জল খান। শরীরে আর্দ্রতা বজায় থাকবে। ধীরে ধীরে খাবেন। ঢকঢক করে খাবেন না।
লক্ষ্মীপুজোর দিন অন্ন গ্রহণ না করলে কী খাবেন
(১) সাবু বা সামা চালের খিচুড়ি বা পায়েস, ওটস, ডালিয়া, ফল খাবেন পরিমাণমতো। সবজির তরকারি খান।
(২) মাখনা বা পদ্মফুলের বীজ, ড্রাই ফ্রুটস খেতে পারেন। ভাজাভুজি খাবার খাবেন না। একসঙ্গে অনেক খাবার না খেয়ে বারবার অল্প পরিমাণে খাবার খান। মাখনায় ক্যালোরি কম, গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম থাকে বলে রক্তের শর্করার মাত্রা বেড়ে যায় না হুট করে। ম্যাগনেশিয়াম, লোহা ও ফাইবারসমৃদ্ধ মাখনা খেলে হজম হয় ভালো ভাবে। হার্ট ভালো রাখে মাখনা।
(৩) ফাইবারে সমৃদ্ধ সামা চাল অত্যন্ত পুষ্টিকর। স্থুলতার সমস্যা দূর করে। এতে প্রোটিন, দস্তা, লোহা রয়েছে।
(৪) যাঁদের ডায়াবেটিস আছে তাঁরা পালং শাক ও কুমড়ো খাবেন। লোহা, ভিটামিন ও খনিজ পদার্থে ঠাসা এই দুই শাকসবজি ক্যালোরি ঝরতে সাহায্য করে। রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
(৫) আপেল, আঙুর, কমলালেবুর মতো কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স থাকা ফল খাবেন। ফাইবার, প্রোটিন, ভিটামিন সি সমৃদ্ধ এসব ফল খেলে খাইখাই ভাব কমে। পেট ভরা থাকে।
(৬) প্রোবায়োটিক দই, প্রোটিন খাবার ছানা ও পনির, বাদাম জাতীয় খাবার খাবেন।
(৭) আদাকুচি থেঁতো করে কমলালেবুর রসের সঙ্গে মিশিয়ে খান। ডাবের জলে পুদিনা পাতা মিশিয়ে খান। ছাতুর শরবত খাবেন। দীর্ঘ সময় পেট ভরা থাকবে।
কোন কোন খাবার খাবেন না
মিষ্টি, পেস্ট্রি, কৃত্রিম চিনিযুক্ত পানীয়, চিপস, ভাজাভুজি খাবার, পাঁউরুটি, পাস্তা, মেয়োনিজ খাবেন না। এসব রিফাইন্ড কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার খেলে পুষ্টি মেলে না। ক্যালোরি বেড়ে যায়। রক্তের ক্ষতিকর শর্করার মাত্রা ওঠানামা করে। বারবার শক্ত খাবার খাবেন না। চা কফি খাবেন না বেশি পরিমাণে।