Home জীবন যেমন খাওয়দাওয়া গণেশ ঠাকুরের প্রিয় মোদক কতটা স্বাস্থ্যকর?

গণেশ ঠাকুরের প্রিয় মোদক কতটা স্বাস্থ্যকর?

ছবি: রাজীব বসু

বাংলায় নববর্ষ, অক্ষয় তৃতীয়া ছাড়াও যে কোনো শুভকাজের সূচনায় সর্বসিদ্ধিদাতা গণেশের পুজোর প্রচলন আছে। এছাড়াও ভাদ্র ও মাঘ মাসের শুক্লা চতুর্থী তিথিতে গণেশের বিশেষ পুজো করা হয়। ভারতে জন্মাষ্টমীর পর যে শুক্লপক্ষের চতুর্থী তিথি পড়ে তা গণেশ চতুর্থী নামে পরিচিত। সারা দেশে সাড়ম্বরে মহাধুমধাম করে ওইদিন গণেশ পুজো অনুষ্ঠিত হয়।  গণেশ ঠাকুরের প্রিয় মিষ্টি হল মোদক। আদতে মহারাষ্ট্রের মিষ্টি এখন গণেশ ঠাকুরের হাত ধরে বাঙালির ঘরে ঘরে ঢুকে পড়েছে। ছত্রপতি শিবাজি মহারাজের হাত ধরেই খ্যাতি লাভ করে গণেশ উৎসব।

পুরাণ মতে, মিষ্টি জাতীয় পদ গণেশ ঠাকুরের খুব প্রিয় বলে মোদক নিবেদন করা হয় প্রসাদ হিসাবে। এছাড়াও মনে করা হয় মোদক গণেশ ঠাকুরের এত প্রিয় কারণ তিনি জীবনের মিষ্টতাকে গুরুত্ব দেন। তাই মোদক শুধুই মিষ্টি নয় মনে করা হয় তা গণেশ ঠাকুরের প্রতি সমর্পণ ও শুদ্ধ মনে ঈশ্বরের প্রতি ভক্তির প্রতীক। মহারাষ্ট্রে মোদক ছাড়া গণেশ উৎসব অসম্পূর্ণ ভাবা হয়। মোদক বা মারাঠি ভাষায় উকাদিচে মোদক সাধারণত তৈরি করা হয় চালের গুঁড়ি দিয়ে। পীঠের মতোই পুর হিসাবে গুড় মেশানো নারকেল কোড়া দেওয়া হয়। সুগন্ধি মশলা এলাচ, কেশর আর জায়ফল দেওয়া হয়। পিরামিডের মতো নীচের দিকে চ্যাপটা আর ওপর দিকে ছুঁচলো ত্রিভুজাকৃত আকারে গড়া হয়। মোদকের এমন আকৃতিরও গুঢ় দার্শনিক তত্ত্ব আছে। পরম ব্রহ্ম আর আত্মার মধ্যে সেতুবন্ধন করায় মোদক। মহারাষ্ট্রে গণেশ ঠাকুরকে ২১টি মোদক অর্পণ করার রীতি আছে। 

কতটা স্বাস্থ্যকর গণেশ ঠাকুরের প্রিয় মোদক

• গুড় দিয়ে তৈরি হয় মোদক। গুড় রক্তের লোহার পরিমাণ বাড়ায়। হিমোগ্লোবিন বা রক্তের প্রোটিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। 

• নারকেল কোড়া দেওয়া হয় মোদকের পুরে। নারকেলে রয়েছে স্টেরল নামক পদার্থ যা রক্তের ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। হার্টের পক্ষে ভালো গুড কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায়। 

• মোদক তৈরিতে ঘি ব্যবহার করা হয়। ঘি অন্ত্রের লাইনিং ঠিক রাখে। শরীর থেকে টক্সিন বের করে দেয়। 

• স্যাচুরেটেড ফ্যাট, ভিটামিন ও খনিজ পদার্থে সমৃদ্ধ মোদক অত্যন্ত পুষ্টিকর। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

• নারকেল কোরা থাকে বলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে মোদক।

লোহা, ম্যাগনেশিয়াম ও স্বাস্থ্যকর ফ্যাট আছে বলে মোদক খাওয়া গর্ভাবস্থায় হবু মায়ের জন্য উপকারী।

কীভাবে বাড়িতেই তৈরি করবেন গণেশ ঠাকুরের প্রিয় মিষ্টি মোদক?

উপকরণ : দেড় কাপ জল, এক টেবিল চামচ ঘি, ১/৪ টেবিল চামচ নুন আর চালগুঁড়ি

পুরের জন্য লাগবে নারকেল কোড়া আর গুড়, এক টেবিল চামচ এলাচ গুঁড়ো, ১/৪ টেবিল চামচ জায়ফল গুঁড়ো, এক টেবিল চামচ পোস্তগুঁড়ো আর এক টেবিল চামচ ঘি। 

প্রণালী: পাত্রে ঘি গরম করে তাতে প্রথমে পোস্তগুঁড়ো দিন। এরপর ঢিমে আঁচে নারকেল কোড়া আর গুড় দিয়ে পাকিয়ে নিন। জল বেরিয়ে গিয়ে ঝুরোঝুরো হয়ে যাবে।

আঁচ বন্ধ করে দিন। মিশ্রণে এলাচ ও জায়ফল গুঁড়ো মেশান। নামিয়ে নিন, অন্য পাত্রে রেখে ঠান্ডা করুন মিশ্রণ। 

একটা পাত্র গরম আঁচে বসান। জল, তেল বা ঘি, নুন দিয়ে ফোটান। আঁচ কমিয়ে দিন। চালগুঁড়ো যোগ করুন। নাড়াতে থাকুন যতক্ষণ না সব চালগুঁড়ি মিশে যায়। মিশ্রণটি আঁচ থেকে নামিয়ে ঠান্ডা করে নিন। 

ছোট ছোট বলের আকারে কেটে নিন। আঙুল দিয়ে গভীর করে নিয়ে তারমধ্যে নারকেলের পুর ভরে নিন। ওপরের দিকে মুখ বন্ধ করে নিয়ে গোটা মোদক ত্রিভুজাকৃতির আকারে গড়ুন। মনে রাখবেন নীচের ডানদিকের চ্যাপ্টা বসা হবে। গায়ে চামচ দিয়ে লম্বা করে মার্ক করে দিন।

স্টিমার বা পাত্রে ঘি লাগিয়ে ধীরে ধীরে মোদকগুলো বসিয়ে মুখ ঢাকা দিয়ে দিন। অন্য আরেক পাত্রে জল গরম করুন। ১০-১৫ মিনিট মাঝারি আঁচে মোদক ভরা পাত্রটি বসিয়ে স্টিম বা সেদ্ধ করে নিন। সেদ্ধ হয়ে এলে মোদক ঠান্ডা করে নিন। তারপর দুধে কেশর মিশিয়ে ঢেলে দিন।

📰 আমাদের পাশে থাকুন

নিরপেক্ষ ও সাহসী সাংবাদিকতা টিকিয়ে রাখতে খবর অনলাইন আপনার সহায়তা প্রয়োজন। আপনার ছোট্ট অনুদান আমাদের সত্য প্রকাশের পথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।

💠 সহায়তা করুন / Support Us

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version