গত কয়েক বছর ধরে বাংলার ইলিশ-প্রেমীদের হতাশা বেড়েই চলেছে। ইলিশের চাহিদা থাকলেও রফতানির কারণে জোগানে ঘাটতি দেখা দিচ্ছে, যা বাজারে দাম বাড়াচ্ছে এবং ইলিশ কেনা অনেকের জন্য অসম্ভব হয়ে উঠছে। তবে পরিসংখ্যান বলছে, শুধু রাজ্যের বাজারেই নয়, রফতানি ক্ষেত্রেও কমছে বাংলার ইলিশ, যার ফলে আয়েও ধাক্কা লাগছে।
বাণিজ্য মন্ত্রকের তথ্য অনুসারে, চলতি অর্থবর্ষে এ পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ থেকে মাত্র ২৯০ কেজি ইলিশ রফতানি হয়েছে। গত অর্থবর্ষে এই পরিমাণ ছিল ১৪৫০ কেজি, আর তার আগের বছরে ২৮৫ কেজি। ২০২১-২২ অর্থবর্ষে ১৯,৮০০ কেজি ইলিশ রফতানি হলেও তার সিংহভাগ গিয়েছিল বাংলাদেশে। কারণ তখন ইয়াস, অশনি, সিত্রাং-এর মতো ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বাংলাদেশকে ভারত থেকে ইলিশ আমদানি করতে হয়েছিল। কিন্তু সেই সুযোগও খুব বেশি কাজে লাগাতে পারেনি পশ্চিমবঙ্গ। বর্তমানে রাজ্য থেকে মূলত ইংল্যান্ড এবং ইউরোপে ইলিশ রফতানি হচ্ছে।
দিঘা ফিশারমেন অ্যান্ড ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শ্যামসুন্দর দাস জানিয়েছেন, “ভারত থেকে খুব কম ইলিশ ইউরোপ এবং অস্ট্রেলিয়ায় যাচ্ছে, যার বেশিরভাগই বাংলার। ছোট ইলিশ ধরা বন্ধে কড়া আইন ছাড়া রফতানি বাড়ানো সম্ভব নয়।” তাঁর মতে, বাংলায় এ ধরনের আইন থাকলেও ওড়িশায় নেই। কেন্দ্র সরকার যদি পদক্ষেপ করে, তাহলে দেশীয় চাহিদা মিটিয়েও রফতানি বাড়ানো সম্ভব হতে পারে।
ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনাইটেড ফিশারমেন অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক বিজন মাইতির মতে, “রাজ্যের ইলিশ বিদেশে তেমন যায় না। তবে পশ্চিমবঙ্গ এখনও ইলিশ ধরার ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে।”
বাংলার ইলিশের চাহিদা যেমন দেশীয় বাজারে বাড়ছে, তেমনি রফতানি কমছে। এর ফলে আয় এবং উৎপাদন ক্ষেত্রেও প্রভাব পড়ছে, যা সমাধানের জন্য কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল।