বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা করল আওয়ামী লীগ। দলটির অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরানোর পর বর্তমান সরকার দেশজুড়ে গণতন্ত্র ধ্বংসের চেষ্টা চালাচ্ছে। তাই দলটি ১ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশব্যাপী বিক্ষোভ শুরু করবে, যার চূড়ান্ত পর্বে ১৬ ফেব্রুয়ারি অবরোধ এবং ১৮ ফেব্রুয়ারি সর্বাত্মক হরতালের ডাক দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে আওয়ামী লীগের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বর্তমান সরকারকে ‘ফ্যাসিবাদী’ আখ্যা দিয়ে অভিযোগ করা হয়েছে, সরকার দেশে আইনের শাসন ধ্বংস করেছে এবং মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধকে অবহেলা করেছে।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, “ইউনুস ও তাঁর সহযোগীরা প্রতিশোধের আগুনে জ্বলছেন। উগ্র মৌলবাদীদের পৃষ্ঠপোষকদের অপসারণ করুন এবং বাংলাদেশকে রক্ষা করুন। দেশের গণতন্ত্র নির্বাসনে চলে গেছে।”
ধাপে ধাপে আন্দোলন পরিকল্পনা
আওয়ামী লীগের ঘোষিত আন্দোলন পরিকল্পনা অনুযায়ী—
১-৫ ফেব্রুয়ারি: লিফলেট বিতরণ
৬ ও ১০ ফেব্রুয়ারি: দেশব্যাপী সমাবেশ ও মিছিল
১৬ ফেব্রুয়ারি: সারাদেশে অবরোধ
১৮ ফেব্রুয়ারি: ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দেশব্যাপী হরতাল
সরকারকে হুঁশিয়ারি
আওয়ামী লীগ স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, তাদের কর্মসূচি ঠেকানোর চেষ্টা করা হলে আরও কঠোর আন্দোলন শুরু হবে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “যদি জনগণের রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া হয়, তাহলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।”
শেখ হাসিনা এখনও ‘প্রধানমন্ত্রী’
বিবৃতিতে শেখ হাসিনাকে এখনো “বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী” হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। দলটি বলেছে, “জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর কন্যা, গণমানুষের নেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।”
ভবিষ্যৎ নির্বাচন থেকে আওয়ামী লীগ বাদ?
এদিকে, অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আনাম ঘোষণা করেছেন যে আওয়ামী লীগকে ভবিষ্যতে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দেওয়া হবে না। ২৫ জানুয়ারি এক সমাবেশে তিনি বলেন, “শুধুমাত্র প্রো-বাংলাদেশ দলগুলোর মধ্যে নির্বাচন হবে। বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালানোর অনুমতি দেওয়া হবে, তবে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন এই দেশে হবে না।”
আওয়ামী লীগের এই ঘোষণার পর বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।