নয়াদিল্লি: বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের অভিযোগকে তীব্রভাবে খারিজ করল ভারত। চট্টগ্রাম পার্বত্য অ়ঞ্চলের খাগড়াছড়ি জেলায় সাম্প্রতিক হিংসতার ঘটনায় ভারতের যোগ থাকার যে অভিযোগ উঠেছে, তাকে “মিথ্যা ও ভিত্তিহীন” বলে জানিয়েছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক।
শুক্রবার বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, “আমরা এই মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগগুলি দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করছি। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার নিজেদের দেশে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে এবং নিয়মিতভাবেই দোষ চাপানোর চেষ্টা করে।”
তিনি আরও যোগ করেন, “স্থানীয় উগ্রপন্থীরা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ এবং জমি দখলের মতো কাজে যুক্ত। অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত আত্মসমীক্ষা করা এবং এদের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ তদন্ত চালানো।”
বাংলাদেশের অভিযোগ
গত সোমবার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী দাবি করেছিলেন, খাগড়াছড়ির হিংসাকে উসকে দিতে কিছু পক্ষ কাজ করছে। তিনি অভিযোগ করেছিলেন, এই ঘটনার পেছনে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের যোগ থাকতে পারে। যদিও তাঁর বক্তব্যের পক্ষে কোনও প্রমাণ দেননি।
চৌধুরীর দাবি,“একটি গোষ্ঠী দুর্গাপুজোর শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট করতে চক্রান্ত করছে। খাগড়াছড়ির ঘটনাও সেই প্রচেষ্টার অংশ।”
হিংসার পটভূমি
গত রবিবার খাগড়াছড়ি জেলায় আদিবাসী জনগোষ্ঠী এবং বাঙালি সেটলারদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এর সূত্রপাত একটি অভিযোগ থেকে— এক আদিবাসী কন্যার গণধর্ষণের ঘটনায় প্রতিবাদ চলছিল। ওই সংঘর্ষে অন্তত ৩ জন নিহত এবং কয়েক ডজন মানুষ আহত হন।
বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো জানিয়েছে, নিহত তিনজনই আদিবাসী সম্প্রদায়ের বাসিন্দা। তারা গুইমারা এলাকায় মারা যান, যা খাগড়াছড়ি শহর থেকে প্রায় ৩৬ কিলোমিটার দক্ষিণে। সহিংসতা জেলা সদর ছাড়িয়ে বিস্তৃত হয়েছে বলেও জানা গেছে।
ভারত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, খাগড়াছড়ির সহিংসতায় তাদের কোনও ভূমিকা নেই। দিল্লির মতে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত বাস্তব পরিস্থিতি সামাল দেওয়া এবং স্থানীয় উগ্রবাদীদের দমন করা। অন্যদিকে ঢাকার অভিযোগ, দুর্গাপুজোর সময়ে অশান্তি তৈরির জন্যই এই সহিংসতা উসকে দেওয়া হয়েছে।