বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহর সাম্প্রতিক অভিযোগ। তিনি দাবি করেছেন, সেনাবাহিনী থেকে তাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে, যাতে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের প্রস্তাব মেনে নেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে তার ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইল থেকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এই অভিযোগ করেন।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, “সেনাবাহিনী আমাদের জানিয়েছে, একাধিক রাজনৈতিক দলকে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের বিষয়ে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে এবং তারা শর্তসাপেক্ষে এতে রাজি হয়েছে। এটি একটি নতুন ষড়যন্ত্র, যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’।”
এনসিপির অভিযোগের পর, বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো ভিন্ন ভিন্ন প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
বিএনপির অবস্থান
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ প্রসঙ্গে বলেন, “যারা গণহত্যা ও লুটপাটের সঙ্গে জড়িত নন, তাদের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতে কোনো বাধা নেই। তবে আওয়ামী লীগের অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে এবং জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।”
বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের আরও কয়েকজন নেতা একই সুরে মন্তব্য করেছেন, যা ইঙ্গিত দিচ্ছে যে শেখ হাসিনার পরিবর্তে বিকল্প নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ রাজনীতিতে ফিরলে তাদের আপত্তি নেই।
জামায়াতের কঠোর অবস্থান
জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান এক ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, “আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন জনগণ মেনে নেবে না। ৩৬ জুলাই আওয়ামী লীগের অধ্যায় চিরতরে বন্ধ হয়ে গেছে, নতুন করে তা খোলার কোনো সুযোগ নেই।”
তার মন্তব্যকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এনসিপির অবস্থানকে সমর্থন করার ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন।
আওয়ামী লীগের প্রতিক্রিয়া
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, “চলমান বিষয়টি সম্পর্কে আমি কিছু জানি না। শেখ হাসিনা বারবার নির্বাচিত সভাপতি, তার নেতৃত্বেই আওয়ামী লীগ পরিচালিত হচ্ছে এবং থাকবে।”
তিনি আরও বলেন, “কোনো বিকল্প নেতৃত্বের কথা চিন্তা করা হচ্ছে না। আওয়ামী লীগকে ঘিরে যা কিছু হবে, তার নেতৃত্বে শেখ হাসিনাই থাকবেন।”
সেনাবাহিনীর প্রতিক্রিয়া
এনসিপির দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, “হাসনাত আব্দুল্লাহর স্ট্যাটাসের বিষয়ে আমাদের কোনো মন্তব্য নেই।”
রাজনৈতিক বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু
বাংলাদেশের রাজনীতিতে এই অভিযোগ ঘিরে তীব্র আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে শেখ হাসিনাকে বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের বিকল্প নেতৃত্বের গুঞ্জন নতুন মাত্রা পেয়েছে।
বিএনপি ও জামায়াতের ভিন্ন অবস্থান এবং সেনাবাহিনীর নীরবতা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। আগামী দিনে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কোন পথে এগোবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনা চলছে।
📰 আমাদের পাশে থাকুন
নিরপেক্ষ ও সাহসী সাংবাদিকতা টিকিয়ে রাখতে খবর অনলাইন আপনার সহায়তা প্রয়োজন। আপনার ছোট্ট অনুদান আমাদের সত্য প্রকাশের পথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।
💠 সহায়তা করুন / Support Us

