Home খবর বাংলাদেশ অর্থনীতির রসাতলে বাংলাদেশ! গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকটে শিল্প ধ্বংসের মুখে, ‘৭১ সালের যুদ্ধের সঙ্গে...

অর্থনীতির রসাতলে বাংলাদেশ! গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকটে শিল্প ধ্বংসের মুখে, ‘৭১ সালের যুদ্ধের সঙ্গে তুলনা শিল্পপতিদের

বাংলাদেশ

বাংলাদেশে শুধু রাজনৈতিক অচলাবস্থা নয়, দেশটি বর্তমানে এক ভয়াবহ অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি। গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকটের কারণে স্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো কার্যত ধ্বংসের পথে বলে সতর্ক করলেন দেশের শীর্ষ শিল্প সংগঠনের নেতারা।

রবিবার ঢাকার গুলশান ক্লাবে এক যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে বাংলাদেশের টেক্সটাইল মিল মালিকদের সংগঠন (BTMA), FBCCI, BGMEA, BKMEA, BTTLMEA, BCI ও ICC-Bangladesh নেতারা জানিয়েছেন, এখনই পদক্ষেপ না নিলে দেশে “দুর্ভিক্ষ-সদৃশ” পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।

BTMA সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল পরিস্থিতিকে তুলনা করেছেন ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে। তাঁর অভিযোগ, “তখন বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়েছিল, এখন উদ্যোক্তাদের ধ্বংস করা হচ্ছে। গ্যাস বিল দিচ্ছি, কিন্তু গ্যাস পাচ্ছি না। কল-কারখানা বন্ধ, অথচ ঋণ পরিশোধের চাপ, সুদের হার আকাশছোঁয়া। আমাদের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গেছে। এটা একটা সাজানো চক্রান্ত।”

BCI সভাপতি আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, “তিনটি কিস্তি না দেওয়াতেই উদ্যোক্তাদের খেলাপি ঘোষণা করা হচ্ছে। অথচ গ্যাস নেই, উৎপাদন নেই, বেতন বাকি—এই অবস্থায়ও সরকার কোনও সহানুভূতি দেখাচ্ছে না। চাকরি বাঁচাতে না পারলে দেশের অর্থনীতি ভেঙে পড়বে।”

BTTLMEA চেয়ারম্যান হোসেন মাহমুদ বলেন, “একাধিক কারখানা ইতিমধ্যেই বন্ধ হয়ে গেছে। এটা কি সরকারের ব্যর্থতা নয় যে তারা গ্যাস-বিদ্যুৎ দিতে পারছে না? ভোলা থেকে পাইপলাইন সম্প্রসারণ, অফশোর ড্রিলিং বা কয়লা উত্তোলন না হলে ভবিষ্যৎ আরও অন্ধকার।”

BTMA ডিরেক্টর খোরশেদ আলম বলেন, “সরকার গ্যাস সরবরাহ না করেই বিল নিচ্ছে। যদি টেক্সটাইল খাতকে তারা সমর্থন না করতে চায়, তাহলে স্পষ্ট করে জানাক।”

BTMA-র সহসভাপতি সালেউদ্দিন জামান খান জানান, “প্রতিদিন আমি ৬০ লক্ষ টাকা বেতন দিচ্ছি, অথচ উৎপাদন একদম বন্ধ। এভাবে চলতে থাকলে এক-দুই মাসের মধ্যেই অর্ধেক কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। ১৪–১৫% সুদের হার একপ্রকার মৃত্যুদণ্ডের শামিল।”

উদ্যোক্তারা আরও অভিযোগ করেছেন, সরকারের আমদানি নীতি দেশের শিল্প খাতকে ধ্বংস করছে। “বিদেশিদের বিনিয়োগের আহ্বান জানানো হচ্ছে, কিন্তু তারা জানে বাংলাদেশে বিনিয়োগ অস্থির, ভিয়েতনাম এখন অনেক লাভজনক,” বলেন রাসেল।

অর্থনৈতিক এই বিপর্যয়ের মধ্যেই রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও ঘনীভূত হচ্ছে। অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনুসের ওপর সেনাবাহিনীর চাপ বাড়ছে—ডিসেম্বারের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচনের নির্ধারিত দিন ঘোষণা করতে হবে বলে তাঁরা চাইছেন।

এদিকে সরকারি দপ্তর, এনবিআর, স্কুল শিক্ষক ও নগর কর্পোরেশন কর্মীদের মধ্যে প্রতিবাদ বিক্ষোভ জোরাল হয়েছে। এনবিআর জানিয়েছে, তারা আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করতে পারে।

সরকারি স্কুল শিক্ষকেরা তাঁদের চাকরির বেতন কাঠামো পুনর্বিন্যাসের দাবিতে সোমবার থেকে পূর্ণদিবস কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন। দাবি মানা না হলে আন্দোলন চলবে অনির্দিষ্টকালের জন্য।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version