Home খবর রাজ্য বাল্যবিবাহ রুখতে শুধু মেয়েই নয়, এবার ছেলেদেরও সচেতন করবে রাজ্য সরকার

বাল্যবিবাহ রুখতে শুধু মেয়েই নয়, এবার ছেলেদেরও সচেতন করবে রাজ্য সরকার

বক্তব্য রাখছেন রাজ্যের নারী ও শিশুকল্যাণ ও সমাজকল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী শশী পাঁজা

কলকাতা: বাল্যবিবাহ রোধে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এবার কেবল কিশোরী মেয়েদের নয়, কিশোর ছেলেদের মধ্যেও সচেতনতা গড়ার উপর জোর দেওয়া হবে বলে জানালেন রাজ্যের নারী ও শিশুকল্যাণ ও সমাজকল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী শশী পাঁজা।

সোমবার রাজ্য স্তরের ‘Adolescent Empowerment Consultation’-এ বক্তব্য রাখতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন, “শুধু মেয়েদেরই নয়, ছেলেদেরও বুঝিয়ে বলতে হবে অল্প বয়সে বিয়ের ক্ষতিকর দিকগুলি। আইন অনুযায়ী, বিয়ের নির্ধারিত বয়সের আগেই যেন কেউ বিয়ে না করে, তা নিশ্চিত করতেই ছেলেদের মধ্যেও সচেতনতা বাড়াতে হবে।”

২০২২ সালে ইউনিসেফের সহযোগিতায় রাজ্য সরকার ‘District Action Plan’ তৈরি করে এবং ২০২৩ সালে ‘Child Marriage Reporting and Tracking Mechanism’ চালু করে। সেই প্রকল্পের অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জগুলি এদিনের আলোচনায় উঠে আসে।

জাতীয় পরিবার স্বাস্থ্য সমীক্ষা-৫ (NFHS-5)-এর তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যে প্রায় ৪১ শতাংশ মেয়ের অপ্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় বিয়ে হয়ে যায়। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাল্যবিবাহ হয় পূর্ব মেদিনীপুর (৫৭%), এরপর পূর্ব বর্ধমান (৫০%)। সবচেয়ে কম বাল্যবিবাহ হয় জলপাইগুড়িতে (১৮%)।

শশী পাঁজা বলেন, “সমাজে সচেতনতা তৈরিই বাল্যবিবাহ রোধের মূল চাবিকাঠি। তাই শুধু মেয়ে বা মা-বোনদের সঙ্গে কথা না বলে, সেখানে ছেলেদের, পুরুষদের, যুবকদেরও যুক্ত করতে হবে।”

এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব (নারী ও শিশুকল্যাণ) সংহমিত্রা ঘোষ, ইউনিসেফের পশ্চিমবঙ্গ শাখার প্রধান ডঃ মনজুর হোসেন সহ রাজ্যের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পঞ্চায়েত, কারিগরি ও দক্ষতা উন্নয়ন দপ্তরের আধিকারিকরা।

মন্ত্রী আরও বলেন, “আজকের কিশোর-কিশোরীরা মোবাইল, সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাবে নানা রকম প্রলোভনে পড়ছে। ওদের সঙ্গে আরও সহানুভূতির সঙ্গে কাজ করতে হবে। কন্যাশ্রী প্রকল্প আজ শুধু মেয়েদের স্কুলে রাখতেই নয়, অনলাইন নিরাপত্তা শেখাতেও সাহায্য করছে।”

ইউনিসেফের রাজ্য প্রধান ডঃ মনজুর হোসেন বলেন, “এই আলোচনা শুধুই পর্যালোচনা নয়, এটি এক নতুন আহ্বান—সব স্তরের অংশগ্রহণকারীদের সম্মিলিত উদ্যোগেই কিশোর-কিশোরীদের সার্বিক বিকাশ সম্ভব। সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তি, পঞ্চায়েত সদস্য, স্বনির্ভর গোষ্ঠী, শিক্ষক, ধর্মীয় নেতা ও যুব সম্প্রদায়ের সক্রিয় অংশগ্রহণ জরুরি।”

এদিন জেলাগুলির আধিকারিকরা তাদের সাফল্যের কৌশল ও চ্যালেঞ্জগুলি তুলে ধরেন। যেমন, স্কুল ও সম্প্রদায়ভিত্তিক সচেতনতা অভিযান, তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ, সফল ব্যক্তিত্বদের উদাহরণ, অ্যাপভিত্তিক রিপোর্টিং, হেল্পলাইন ব্যবহার এবং প্রেম করে পালিয়ে যাওয়ার মতো ঘটনাগুলির প্রতিরোধে বিশেষ কৌশল প্রণয়ন।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version