আগামী বছরের (২০২৫ সাল) শেষ বা ২০২৬ সালের শুরুতে বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। সোমবার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক বক্তৃতায় এই সময়সীমা উল্লেখ করেন বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনুস।
৭৭ বছর বয়সি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পর ৮৪ বছর বয়সি নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী মহম্মদ ইউনুসকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগ করা হয়। আগস্ট মাসে ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে হাসিনার ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। আন্দোলনের জেরে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে প্রবেশ করলে হাসিনা হেলিকপ্টারে করে প্রতিবেশী ভারতে চলে আসতে বাধ্য হন।
হাসিনার বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন, বিরোধী দলের উপর দমন-পীড়ন, এবং একতরফা নির্বাচনের অভিযোগ উঠেছিল। ক্ষমতা ধরে রাখতে তিনি আদালত ও প্রশাসনকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
মহম্মদ ইউনুস বলেছেন, নির্বাচন আয়োজনের আগে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে পুনরুদ্ধার করা এবং প্রয়োজনীয় সংস্কার কার্যকর করা অত্যন্ত জরুরি।
তিনি বলেন, “যদি রাজনৈতিক দলগুলো ন্যূনতম সংস্কারের মাধ্যমে দ্রুত নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে একমত হয়, তাহলে নির্বাচন আগামী বছরের নভেম্বরের মধ্যেই অনুষ্ঠিত হতে পারে। তবে পূর্ণ সংস্কার কার্যকর করতে আরও কয়েক মাস সময় লাগবে।”
একটি সঠিক ভোটার তালিকা প্রণয়নকেই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করে ইউনুস জানান, ভুয়ো নাম বাদ দেওয়া এবং প্রথম বার ভোটার হওয়া তরুণ-তরুণীদের অন্তর্ভুক্ত করা অত্যন্ত জটিল প্রক্রিয়া।
ইউনুস বলেন, তিনি এমন একটি নির্বাচন আয়োজনের স্বপ্ন দেখেন যেখানে একশো শতাংশ ভোটারের উপস্থিতি নিশ্চিত করা যাবে। এটি সম্ভব হলে, ভবিষ্যতে কোনও সরকার নাগরিকদের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার সাহস করবে না, বলে মনে করেন তিনি।
রাজনৈতিক মহলের মতে, বর্তমানে বিএনপি এবং অন্যান্য পুরনো বিরোধী দলগুলি নিজেদের সংগঠন চাঙ্গা করার কাজে মন দিয়েছে। শেখ হাসিনার শাসনকালের অবসানে নতুন রাজনৈতিক ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে তারা।
আরও পড়ুন: চিন্ময় কৃষ্ণের আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ চিকিৎসার জন্য ভারতে, নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন পরিবার