বাংলাদেশ সরকার বৃহস্পতিবার বিকেলে জামাত-ই-ইসলামি এবং ইসলামি ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই বিষয়ে সতর্কবার্তা দিয়ে বলেন, “এরা জঙ্গি সংগঠন হিসেবে আন্ডারগ্রাউন্ডে গিয়ে ধ্বংস করার চেষ্টা করবে। সেখানেও জঙ্গি সংগঠন হিসেবে এদের মোকাবিলা করতে হবে এবং মানুষকে রক্ষা করার চেষ্টা সবাই মিলে করতে হবে। বাংলাদেশের মাটিতে জঙ্গিদের ঠাঁই হবে না।”
প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণার পরপরই ঢাকার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান জানান, “ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সরকারের নির্বাহী আদেশে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ১৮(১) ধারা অনুযায়ী জামাত-ই-ইসলামি, ছাত্রশিবির ও তাদের অন্যান্য অঙ্গ সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।”
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেন, “এই দলগুলো নিষিদ্ধ হওয়ার পর তারা আর এই নামে রাজনীতি করতে পারবে না।” কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে হিংসার ঘটনায় জামাত ও তার ছাত্রসংগঠন ইসলামি ছাত্রশিবিরের জড়িত থাকার অভিযোগ এসেছে নানা মহল থেকে।
গত সোমবার আওয়ামি লিগ নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় সভায় জামাত শিবিরকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে একমত হন জোটের শীর্ষ নেতারা। আওয়ামি লিগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সেই বৈঠক হয়। আদালতের রায়ে ২০১৩ সালে জামাতের নিবন্ধন বাতিল করা হয় এবং ২০২৩ সালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ তাদের আপিল খারিজ করে দেয়। ফলে দলটির নিবন্ধন বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল রয়েছে।
জামাত-ই-ইসলামি ও ইসলামি ছাত্র শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নেতারা। সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে উপদেষ্টা ও কেন্দ্রীয় কমিটির এক যৌথ সভায় তারা প্রতিক্রিয়া জানান। সভাপতিত্ব করেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শিক্ষাবিদ শহিদ জায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী।
পথে অভিনয় শিল্পীরা
এদিকে পড়ুয়াদের হত্যা ও গ্রেফতারির প্রতিবাদে পথে নামেন অভিনয়শিল্পীরা। তাঁদের মধ্যে মোশাররফ করিম বলেন, “আমাদের দেশে যে অবস্থা বর্তমানে সৃষ্টি হয়েছে, তাতে আমরা ঘরে বসে থাকার মতো অবস্থায় নেই। আমরা শান্তি চাই। রক্ত দেখতে চাই না।” অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন বলেন, “নাগরিক হিসেবে আমাদের সঙ্গে কীভাবে কথা বলতে হয় সেটি কি করেছেন, চেষ্টা করছেন? আমরা ভালো দিন দেখতে চাই। আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্ম। যারা মারা গেছে, তাদের হত্যার বিচার চাই।”