বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার শীর্ষ মহিলাদের ‘স্যর’ বলেই সম্বোধনের নিয়ম বাতিল সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বৃহস্পতিবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যা পর্যবেক্ষকদের মতে শেখ হাসিনার ১৬ বছরের শাসনের আমলের একটি চিত্রকে সেবার শেষ করে দিয়েছে।
উপদেষ্টা পরিষদের প্রেস উইং জানিয়েছে, “হাসিনার দীর্ঘ শাসনামলে সরকারি কর্মকর্তা কীভাবে প্রথমে ‘স্যর’ সম্বোধন শুরু হয়েছে, তা প্রতিষ্ঠানগতভাবে অস্বাভাবিক ও কাম্য নয়” । ঘনিষ্ঠ মহিলাদেরও ‘স্যর’ বলে ডাকার এই রীতি সমালোচিত হয়েছিল তবে বৈঠকে সেই প্রথা বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সাংগঠনিক সংস্কারের অংশ হিসেবে একটি নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে, যার নেতৃত্বে আছেন শক্তি, সড়ক, পরিবেশ, রেল ও জলসম্পদ বিষয়ে উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ও ফৌজুল কবীর খান । তাদের উদ্দেশ্য হলো এক মাসের মধ্যে প্রস্তাবনা তৈরি করে এটি উপদেষ্টা পরিষদে জমা দেয়া।
উল্লেখ্য, শুধু ‘স্যর’ সম্বোধনই নয়; হাসিনার আমলের “পুরনো ও জটিল” প্রতিষ্ঠানগত আইনগুলোর পুনর্বিবেচনাও বলা হচ্ছে এই কমিটির অধিকারে। প্রোটোকল ও শিষ্টাচার রীতি আপডেটের দাবি কয়েক বছর ধরেই ছিল, অথচ এটি বড়সড় রূপ পেয়েছে এখনই।
এই পদক্ষেপকে অভ্যন্তরীণ পর্যায়ে একটি নতুন প্রশাসনিক সংস্কারের সূচনা হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি গত আগস্টে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর থেকে মৌলিক বদল ধরেছে এবং নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত সরকার বড় ধরনের সংস্কারের পথে এগোচ্ছে । নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী বছর জুনের মধ্যে ।
বর্তমান পদক্ষেপটি সামাজিক সমতা ও সমান সম্বোধনের একটি লক্ষণ হিসেবে গণ্য হচ্ছে। প্রশাসনিক পর্যায়ে এটি ভবিষ্যতে কী ধরনের প্রভাব ফেলে, তা দেখার বিষয়।