ঢাকা: বাংলাদেশে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে এখনও পর্যন্ত ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশের গুলিতে একজন সাংবাদিকও মারা গিয়েছেন বলে সে দেশের সাংবাদ মাধ্যমসূত্রে জানা গিয়েছে। সাংবাদিকের শরীরে ছররা গুলির ক্ষত মিলেছে।
নিহতদের মধ্যে ছাত্র ছাড়াও ব্যবসায়ী বা রিক্সা চালকও রয়েছেন। তাঁরা এই চলমান সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে মারা গিয়েছেন বলে সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে।
ঢাকার যাত্রাবাড়ি এলাকায় সকাল থেকেই পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ চলছে। রাজধানীর উত্তরায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও র্যাবের সংঘর্ষ শুরু হয় সকাল এগারোটা থেকে। ঢাকার আরও বেশ কয়েকটি এলাকায় সংঘর্ষের খবর পাওয়া গিয়েছে।
ইন্টারনেট সার্ভিস ব্যাহত
বৃহস্পতিবার রাত নটা থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধের অভিযোগ উঠে। ব্রডহ্যান্ড বা মোবাইল কোনও ইন্টারনেট সার্ভিস পাওয়া যাচ্ছে না। গত কয়েক দিন ধরে চলমান এই আন্দোলনে বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ বিভিন্ন এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা ব্যাহত ছিল। যদিও সরকারি ভাবে এ নিয়ে কিছু ঘোষণা করা হয়নি।
কড়া হুঁশিয়ারি পুলিশ কর্তার
পুলিশের গায়ে হাত দেওয়া হলে কাউকে ছাড়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান হারুন অর রশীদ। বৃহস্পতিবার তিনি যাত্রা বাড়ি এলাকা পরিদর্শনে যান। সেই সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “যারা পুলিশের গায়ে হাত দিচ্ছে, রাস্তায় আগুন লাগাচ্ছে- আমরা তাদের কাউকে ছাড় দেবো না”। তিনি আরও বলেন, “পুলিশ ধৈর্যের পরীক্ষা দিচ্ছে। তারা যদি মনে করে এটা দুর্বলতা, তবে তারা বোকার স্বর্গে বাস করছে।” এই হিংসার জন্য তিনি সরাসরি জামাত ও বিএনপি-র দিকে আঙুল তোলেন।
বিটিভিতে আগুন
বাংলাদেশের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন বিটিভিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে আগুন লাগানোর অভিযোগ ওঠে। বেশ কয়েকজন কর্মী সেই সময় আটকা পড়ে যান। পরে দমকল এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এই পরিস্থিতি বিটিভি তাদের সম্প্রচার বন্ধ রখেছে।
কোটা মামলার শুনানি রবিবার
কোটা পুনর্বহাল করে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা মামলার শুনানি হবে রবিবার। বর্তমান পরিস্থিতিতে শুনানি এগিয়ে আনার জন্য আবেদন করা হয়। এর আগে আবেদনের শুনানির জন্য ৭ আগস্ট দিন ঠিক ছিল।
বৈঠকে বসার আবেদন নাকচ
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক কোটা সংস্কারকারীদের বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসার আবেদন জানালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তা নাকচ করে দিয়েছে।
আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মো. নাহিদ ইসলাম বৃহস্পতিবার বিকেলে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে তিনি জানান, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে সহিংসতা চালিয়ে সরকার উদ্ভুত পরিস্থিতি তৈরি করেছে। এর দায় সরকারেরই। সরকার আলোচনার কোনো পরিস্থিতি রাখেনি।তিনি লেখেন, শহীদের রক্তের উপর কোনো সংলাপ হবে না। সরকারকেই সমাধানের পথ বের করতে হবে।
তার দাবি, “সকল ছাত্র হত্যার বিচার করতে হবে। ক্যাম্পাসগুলোকে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসমুক্ত করতে হবে। অনতিবিলম্বে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের নিরস্ত্র করে রাজপথ থেকে অপসারণ করতে হবে”।