শেখ হাসিনার ভারতে থাকার মেয়াদ বৃদ্ধি, কূটনৈতিক টানাপোড়েন তুঙ্গে
ভারতে থাকা বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রেসিডেন্ট পারমিটের মেয়াদ বৃদ্ধি করেছে মোদী সরকার। আজ কূটনৈতিক সূত্রে এ খবর জানা গিয়েছে। তবে, এই সিদ্ধান্তের পেছনে আইনি কারণ রয়েছে বলে দাবি করেছে নয়াদিল্লি। এরই মধ্যে বাংলাদেশের অভিবাসন এবং পাসপোর্ট দফতর হাসিনাসহ ৯৭ জনের পাসপোর্ট বাতিল করেছে।
বাংলাদেশে চাপ বাড়ছে
দু’দিন আগেই বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল হাসিনাকে দেশে ফেরানোর জন্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল। ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু, শেখ হাসিনার বিষয়ে বাংলাদেশের জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের প্রধান মেজর জেনারেল ফজলুর রহমান জানিয়েছেন, ভারত যদি হাসিনাকে না পাঠায়, তবে অনুমতি নিয়ে ভারতে গিয়েও তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
ভারতের অবস্থান
দিল্লির কূটনৈতিক সূত্রে জানানো হয়েছে, এই প্রত্যর্পণের দাবি একেবারেই আইনি বিষয়। কোনও অন্তর্বর্তী সরকার অন্য দেশের স্থায়ী সরকারের কাছে রাজনৈতিক নেতার প্রত্যর্পণ চাইলে, সমস্ত আইনি প্রক্রিয়া খতিয়ে দেখতে হয়। বাংলাদেশের ‘নোট ভার্বাল’ চিঠির জবাব দেওয়া হবে, তবে সময় লাগবে। সেই কারণেই শেখ হাসিনার ভারতে থাকার মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে।
কেন মেয়াদ বাড়ল?
ভারতের ফরেন রিজিয়নাল রেজিস্ট্রেশন অফিস (এফআরআরও)-এর মাধ্যমে হাসিনার ভারতে থাকার কাগজপত্র বৈধ করা হয়েছে। তবে কত দিনের জন্য মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে, তা স্পষ্ট নয়। উল্লেখযোগ্য, ভারতে উদ্বাস্তু সংক্রান্ত কোনও নির্দিষ্ট আইন না থাকায় এফআরআরও-র মাধ্যমে হাসিনাকে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশে পাসপোর্ট বাতিল
আজ বাংলাদেশের অভিবাসন দফতর হাসিনা-সহ মোট ৯৭ জনের পাসপোর্ট বাতিল করেছে। জুলাই আন্দোলনে দমনপীড়নের অভিযোগ রয়েছে এঁদের বিরুদ্ধে। যদিও শেখ হাসিনা ছাড়া বাকিদের নাম প্রকাশ করা হয়নি।
ভারত-বাংলাদেশ স্নায়ুযুদ্ধ
শেখ হাসিনাকে ঘিরে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে স্নায়ুর লড়াই আরও তীব্র হচ্ছে। নয়াদিল্লি বিষয়টিকে কূটনৈতিক চাপ না বলে, আইনি প্রক্রিয়া হিসেবে দেখছে। তবে, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সব আনুষ্ঠানিকতা পূর্ণ হয়নি বলে দাবি করেছে সাউথ ব্লকের একটি সূত্র।
পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল আকার নিচ্ছে। এখন দেখার, শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ ইস্যু ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের উপর কতটা প্রভাব ফেলে।