খবর অনলাইন ডেস্ক: “কাল আবার সূর্যোদয় হবে”, জীবন ফিরে পেয়ে এটাই ছিল বছর ৩০-এর ডেরেক পিফাফের প্রথম প্রতিক্রিয়া। বছর দশেক আগে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছিলেন ডেরেক। ভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন, কিন্তু ক্ষতবিক্ষত হয়ে গিয়েছিল মুখমণ্ডল। সে মুখের দিকে তাকানো যায় না। জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছিল। কিন্তু ১০ বছর পরে যেন নতুন জীবন ফিরে পেলেন ডেরেক। এর মূলে রয়েছে ফেস ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন বা মুখ প্রতিস্থাপন।
বয়স তখন বছর কুড়ি। সময়টা ২০১৪ সাল। কলেজছাত্র ডেরেক হঠাৎ একদিন ক্যাবিনেট থেকে বাবার বন্দুক বের করে নিয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেন। রক্তাক্ত অবস্থায় গুরুতর জখম ডেরেককে নিয়ে তাঁর বাবা জেরি আর মা লিজা ছুটে যান হাসপাতালে। কিন্তু চিকিৎসকরা স্পষ্ট জানিয়ে দেন মিরাকল না হলে ডেরেকের বেঁচে থাকা কঠিন। কিন্তু মিরাকল হয়। প্রাণে বেঁচে যান ডেরেক।
গত ১০ বছরে ডেরেকের মুখে ৫৯ বার অস্ত্রোপচার হয়। কিন্তু ডেরেক শক্ত খাবার খেতে পারতেন না। ভালো করে কারও সঙ্গে কথাও বলতে পারতেন না। নাক ছিল না বলে চোখে চশমা লাগাতে পারতেন না।
শেষ বারের মতো মুখ প্রতিস্থাপনের চেষ্টা করেন চিকিৎসকরা। অস্ত্রোপচার করে ডেরেকের মুখের ৮৫% অংশ প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হয়। ডোনারের বা দাতার টিস্যুর সাহায্যে মুখে অস্ত্রোপচার করা হয়। চোখের পাতার ওপর ও নীচ অংশ, মুখের ওপর ও নীচ অংশ, দাঁত, নাক, চোয়াল, ঘাড়ের ত্বক সব নতুন করে প্রতিস্থাপন করা হয়।
চলতি বছরই রচেস্টারের মেয়ো ক্লিনিকে ৮০ জন চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে ৫০ ঘণ্টা ধরে জটিল অস্ত্রোপচার করা হয় আমেরিকার মিশিগানের বাসিন্দা ডেরেকের।
গত ২০ বছরে গোটা বিশ্বে মাত্র ৫০টি মুখ প্রতিস্থাপনের অস্ত্রোপচার হয়। সে দিক থেকে দেখলে ডেরেকের মুখ প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে নতুন জীবন ফিরে পাওয়ার ঘটনা সত্যি বিরল৷