গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি ও বহু বন্দির মুক্তি নিয়ে হামাস একটি খসড়া চুক্তি মেনে নিয়েছে। মধ্যস্থতাকারী কাতার এই আলোচনাকে “চুক্তির সবচেয়ে কাছাকাছি পর্যায়” বলে উল্লেখ করেছে।
মঙ্গলবার একাধিক সূত্র জানিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মিশর এবং কাতারের মধ্যস্থতায় এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা এই আলোচনা এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে। প্রস্তাবিত চুক্তির একটি অনুলিপি অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস পেয়েছে। মিশরীয় এবং হামাসের প্রতিনিধিরা এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তবে ইজরায়েলের প্রশাসনিক কর্তারা জানিয়েছেন, চুক্তির বিশদ বিবরণ এখনও চূড়ান্ত হচ্ছে এবং তা মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে।
তিন পর্যায়ের পরিকল্পনা: প্রথম পর্যায়ে ৬ সপ্তাহ ধরে ধাপে ধাপে ৩৩ জন বন্দির মুক্তি নিশ্চিত হবে।
ইজরায়েলি বাহিনীর প্রত্যাহার: ইজরায়েলি বাহিনী জনবহুল এলাকা থেকে সরে আসবে এবং গাজার উত্তরে মানবিক সাহায্য প্রবাহ শুরু হবে।
বন্দি বিনিময়: প্রথম পর্যায়ে মহিলা, শিশু এবং প্রবীণ বন্দিদের বিনিময়ে শতাধিক ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি পাবে।
মানবিক সাহায্য বৃদ্ধি: প্রতিদিন প্রায় ৬০০ ট্রাক গাজায় ত্রাণ নিয়ে প্রবেশ করবে।
চুক্তির দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের আলোচনা প্রথম পর্যায়ের ৪২ দিনের মধ্যেই চূড়ান্ত করতে হবে। তবে কোনো লিখিত নিশ্চয়তা নেই যে এই সময়ের মধ্যে যুদ্ধবিরতি অব্যাহত থাকবে।
হামাস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। কাতারের মুখপাত্র জানিয়েছেন, “চুক্তি সম্পন্নের সম্ভাবনা খুবই উজ্জ্বল।”
ইতিমধ্যে ইজরায়েলের বিমান হামলায় মঙ্গলবার ১৮ জন নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে চারটি শিশু এবং দুই মহিলা ছিলেন। এছাড়া ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা ইজরায়েলের দিকে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ জানুয়ারি শপথ গ্রহণের আগে চুক্তি চূড়ান্ত করার জন্য উভয়পক্ষের ওপর চাপ বেড়েছে। মার্কিন মধ্যপ্রাচ্য দূত স্টিভ উইটকফ মধ্যস্থতায় অংশ নিয়েছেন। ট্রাম্প সোমবার এক বিবৃতিতে বলেন, “যুদ্ধবিরতি চুক্তি খুবই কাছাকাছি।”
ইজরায়েল ও হামাসের মধ্যে দীর্ঘ ১৫ মাস ধরে চলা এই সংঘাতে ৪৬,০০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। সংঘর্ষ শেষ করার লক্ষ্যে চুক্তিটি একটি বড় পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।