শনিবার হামাসের পক্ষ থেকে তিন ইজরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন ইজরায়েলি-আর্জেন্টিনীয় ইয়াইর হর্ন, ইজরায়েলি-আমেরিকান সাগুই ডেকেল-চেন এবং ইজরায়েলি-রাশিয়ান সাশা ট্রুফানভ। মিশর ও কাতারের মধ্যস্থতায় এই মুক্তি সম্ভব হয়েছে। বন্দিদের গাজা থেকে আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটির হাতে তুলে দেওয়া হয়, যা পরে ইজরায়েলি বাহিনীর কাছে পৌঁছে দেয়। ইজরায়েলি সামরিক বাহিনী নিশ্চিত করেছে যে মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দিরা নিরাপদেই দেশে ফিরে এসেছেন।
এই মুক্তি একটি বন্দি বিনিময় চুক্তির অংশ, যার মাধ্যমে ৩৬৯ জন প্যালেস্তেনীয় বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এই চুক্তিকে ইজরায়েল ও হামাসের মধ্যে চলমান অস্ত্রবিরতি রক্ষার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিস শহরে রেড ক্রসের হাতে তুলে দেওয়ার সময় তিন ইজরায়েলি বন্দিকে সুস্থ অবস্থায় দেখা যায়। মুক্তি পাওয়ার পর তাঁদের হাতে উপহারের ব্যাগ ও মুক্তির স্বীকৃতি হিসেবে সার্টিফিকেট দেওয়া হয়।
তবে পরিস্থিতি এখনও অশান্ত। ইজরায়েলি সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে গাজায় ত্রাণ প্রবেশ আটকে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, যা মানবিক সংকট আরও বাড়িয়ে তুলেছে। হামাস হুঁশিয়ারি দিয়েছে, যদি ইজরায়েল তাদের ত্রাণ সরবরাহের প্রতিশ্রুতি পূরণ না করে, তবে তারা আর কোনো বন্দি মুক্তি দেবে না।
এই মুক্তির ফলে যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দির সংখ্যা দাঁড়াল ১৯-এ। তবে এখনো বহু বন্দি আটকে রয়েছেন, যাঁদের মুক্তির জন্য আলোচনা চলছে।
গাজার পরিস্থিতি অত্যন্ত শোচনীয়। হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন এবং খাদ্য, জল ও বিদ্যুতের মতো মৌলিক চাহিদার অভাবে রয়েছেন। আন্তর্জাতিক মহল অবিলম্বে সংঘাত বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছে এবং সব পক্ষকে একটি স্থায়ী অস্ত্রবিরতির জন্য আলোচনায় বসার অনুরোধ জানিয়েছে।
এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মন্তব্য, যেখানে তিনি প্যালেস্তেনীয়দের গাজা থেকে স্থায়ীভাবে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দেন, তা বিশ্বব্যাপী নিন্দিত হয়েছে। এই মন্তব্য উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
পরিস্থিতির ওপর সবার নজর রয়েছে, বিশেষ করে বাকিদের মুক্তির প্রক্রিয়া এবং অস্ত্রবিরতির ভবিষ্যৎ নির্ধারণের ক্ষেত্রে।