হামাস প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে হত্যা করার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ প্রকাশ করেছে ইজরায়েলি সেনাবাহিনী। ইয়াহিয়ার হত্যাকে গাজা যুদ্ধে ইজরায়েলের অন্যতম বড় সফলতা বলে দাবি করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার ইজরায়েলি বাহিনী জানায়, দক্ষিণ গাজার রাফা জেলায় একাধিক অভিযান চালিয়ে অবশেষে তাঁকে খুঁজে বের করা হয় এবং একটি সংঘর্ষে হত্যা করা হয়।
ইজরায়েলি সামরিক বাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়, “এক বছরেরও বেশি সময় ধরে পরিচালিত অনুসন্ধান এবং অপারেশনের মাধ্যমে সিনওয়ারের গতিবিধি সীমিত করা হয়। গত ১৬ অক্টোবর, ২০২৪-এ, ইজরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (IDF) দক্ষিণ কমান্ডের সৈন্যরা সিনওয়ারকে হত্যা করতে সক্ষম হয়।”
ইজরায়েলের সামরিক মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি জানিয়েছেন, সিনওয়ারকে দক্ষিণ গাজার রাফা অঞ্চলে দুই সশস্ত্র সঙ্গীর সঙ্গে চিহ্নিত করা হয়। ইজরায়েলি সেনাদের তৎপরতায় এই সন্ত্রাসবাদী দলটি গোপন আশ্রয় খুঁজতে ঘর থেকে ঘরে পালানোর চেষ্টা করছিল। সংঘর্ষ শুরু হলে, সেনাবাহিনী তিনজনকেই টার্গেট করে। সিনওয়ার আহত অবস্থায় একা পালিয়ে যান, কিন্তু ড্রোন ফুটেজে তাঁর অবস্থান ধরা পড়ে এবং তাঁর শেষ আশ্রয়স্থল শনাক্ত করা হয়।
হাগারি আরও জানান, ড্রোন ফুটেজে দেখা গেছে যে সিনওয়ার তাঁর হাতে গুরুতরভাবে আঘাত পেয়েছিলেন। তার পর একটি বাড়ির ভেতরে লুকিয়ে ছিলেন। শেষ মুহূর্তে তিনি ড্রোনকে লক্ষ্য করে একটি গাছের ডাল ছুড়ে মারেন, যা তার দুর্বল অবস্থার প্রমাণ। তাঁকে গুলি করে হত্যা করার পর, ইজরায়েলি সেনারা তাঁর দেহ শনাক্ত করে। সিনওয়ারের সঙ্গে একটি বন্দুক এবং ৪০ হাজার শেকেল পাওয়া যায়।
ইজরায়েলি বাহিনী দাবি করেছে, ইয়াহিয়া সিনওয়ার ছিলেন ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলার প্রধান পরিকল্পনাকারী, যেটি হামাস পরিচালনা করেছিল। সেই হামলায় কয়েকশো ইজরায়েলি নাগরিক নিহত হয়েছিল। তিনি হামাসের সামরিক শাখার নেতা ছিলেন এবং গাজার সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রমের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে কাজ করছিলেন।
ইজরায়েলি সেনাবাহিনীর কথায়, “এই সফল অপারেশনটি হামাসের উপর আমাদের চলমান অভিযানের একটি বড় অংশ। আমরা তাদের নেতাদের বিরুদ্ধে একের পর এক আঘাত হানছি।”
তবে, হামাসের পক্ষ থেকে সিনওয়ারের মৃত্যু এখনও নিশ্চিত করা হয়নি। যদিও তাঁর অনুপস্থিতি ও ইজরায়েলি সেনাদের বিবৃতির পর গাজায় উত্তেজনা বাড়ছে। সিনওয়ার ছিলেন হামাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা, যিনি ইসমাইল হানিয়েহর মৃত্য়ুর পর চলতি বছরের আগস্টে শীর্ষপদে বসেছিলেন। ইসমাইল হানিয়েহও ইরানে একটি হামলায় নিহত হন বলে জানা যায়, যদিও ইজরায়েলি সেনাবাহিনী এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।