সপ্তাহান্তে ইজরায়েলে রকেট হামলা চালিয়েছে প্যালেস্তেনীয় সশস্ত্র সংগঠন হামাস। এর পরই ‘যুদ্ধ’ ঘোষণা করেছেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। সোমবার ইজরায়েলের তরফে জানানো হয়েছে, হামলার প্রতিক্রিয়ায় গাজা উপত্যকাকে “সম্পূর্ণ অবরোধ”-এর পরিকল্পনা করছে তারা। এই অঞ্চলে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করার পাশাপাশি খাদ্য ও জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করার পরিকল্পনা করেছে ইজরায়েল।
গাজা শাসনকারী হামাস গোষ্ঠী শনিবার ইজরায়েলে অপ্রত্যাশিত হামলা চালালে ১,২০০-রও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। অন্য দিকে, হামাসকে নিশানা করে ইজরায়েলের পাল্টা হামলায় গাজায় ৪০০ প্যালেস্তেনীয় নিহত হয়েছে বলে খবর।
ইজরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট জানিয়েছেন, “গাজা উপত্যকায় সম্পূর্ণ অবরোধের নির্দেশ দিয়েছি আমি। এর অর্থ, সেখানে বিদ্যুৎ থাকবে না, খাবার থাকবে না, থাকবে না জ্বালানি। সবকিছুই বন্ধ”। মিডিয়া রিপোর্টে প্রকাশ, ইতিমধ্যেই সেখানে জল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এ দিনই ইজরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর এক মুখপাত্র জানান, ইজরায়েলের ভিতরে বর্তমানে দেশের প্রতিরক্ষা বাহিনী এবং হামাসের মধ্যে কোনো সংঘর্ষ চলছে না। পাশাপাশি, গাজা উপত্যকায় সমস্ত সম্প্রদায়ের পুনর্নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে ইজরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী। অন্য দিকে, প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এ দিন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, হামাসের বিরুদ্ধে ইজরায়েলের এই লড়াই ‘মধ্যপ্রাচ্যে পরিবর্তন’ ঘটাবে। কারণ, ইতিমধ্যেই গাজা উপত্যকায় বিমান হামলার মাধ্যমে আঘাত হেনেছে ইজরায়েলের সেনা বাহিনী। তাঁর কথায়, “হামাস এ বার যা টের পাবে, তা এক কথায় অকল্পনীয় এবং ভয়ানক। আমরা মধ্যপ্রাচ্যকে বদলাতে চলেছি।”
২০০৭ সালে প্যালেস্তেনীয় দলগুলির কাছ থেকে ক্ষমতা দখল করে হামাস। অভিযোগ, তার পর থেকে গাজা উপত্যকায় বিভিন্ন স্তরের অবরোধ আরোপ করেছে ইজরায়েল এবং ইজিপ্ট। বলে রাখা ভালো, এ ধরনের অবরোধ হল একটি সামরিক কৌশল যা সাধারণত সমুদ্রপথে একটি নির্দিষ্ট এলাকায় বা বাইরে শত্রু বাহিনী, সরবরাহ, বা বাণিজ্যিক কার্যকলাপ সীমাবদ্ধ বা প্রতিরোধ করতে ব্যবহৃত হয়।
অন্য দিকে, “হামাসের এই নজিরবিহীন সন্ত্রাসী হামলার মুখে ইজরায়েলকে বাড়তি সহযোগিতার” নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন পূর্ব ভূমধ্যসাগরে ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ড বিমানবাহী রণতরী এবং যুদ্ধজাহাজগুলিকে তৈরি থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। ওয়াশিংটন যে এই অঞ্চলে ফাইটার এয়ারক্রাফ্ট স্কোয়াড্রন বৃদ্ধি করছে, সে কথাও জানিয়েছেন অস্টিন।
আরও পড়ুন: রকেট হামলায় মৃতের সংখ্যা প্রায় ৭০০, পাল্টা ইজরায়েলি সেনার হাতে নিহত ৪১৩ হামাস