বিশ্ব সম্প্রতি অশান্তির একটি নতুন পর্যায়ে অবস্থান করছে। রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের পর থেকে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। তারই মধ্যে, ২০২৩-এ অক্টোবর মাসে হামাসের আক্রমণের পর ইজরায়েল ও ইরানের মধ্যে সরাসরি সামরিক সংঘাত দেখা দেয়। ইজরায়েল এখন ইরানের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত। এরই মধ্যে উঠে আসছে ইজরায়ের-ইরানের সম্পর্কের বেশ কিছু ঐতিহাসিক তথ্য।
ইরান-ইজরায়েল গোপন সহযোগিতা
একটা সময় ছিল যখন এই দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার একটি গোপন চুক্তি ছিল। মহম্মদ রেজা শাহ পাহলভির শাসনকালে ইরান ইজরায়েলকে প্রয়োজনীয় কিছু সরবরাহ করত। অন্য দিকে, ইজরায়েলও ইরানকে বিভিন্ন সামরিক ও কৃষি সামগ্রী দিত।
শাহের শাসনকালে ইজরায়েলের ৪০ শতাংশ তেল সরবরাহ করত ইরান। বিনিময়ে ইরানকে অস্ত্র ও প্রযুক্তি দিত ইজরায়েল ।
১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লব ও ইরাকের আক্রমণ
১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর, ইরান ও ইজরায়েলের সম্পর্ক নাটকীয়ভাবে বদলে যায়, কিন্তু তারপরও তাদের মধ্যে বাণিজ্য চলতে থাকে। একই সময়ে, ইরাক ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে, যা ১৯৮০ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত সেই যুদ্ধ স্থায়ী হয়।
ইরান-ইরাক যুদ্ধের সময় ইজরায়েলের সমর্থন
এই যুদ্ধে ইসরায়েল ইরানকে সামরিক সহায়তা প্রদান করে এবং যুদ্ধের সময় ইরানের জন্য অস্ত্র সরবরাহ করে। ইসরায়েল ইরানকে আধুনিক সামরিক সরঞ্জাম যেমন, M-40 অ্যান্টি ট্যাঙ্ক গান, উজি সাবমেশিন গান এবং বিমান ইঞ্জিন সরবরাহ করেছিল।
ইরান ও ইজরায়েল উভয়ই ইরাককে একটি সাধারণ শত্রু হিসেবে দেখত, এবং তাদের মধ্যে সহযোগিতা ছিল ইরাকের বিরুদ্ধে।
অস্ত্র বিক্রির তথ্য
১৯৮০-৮৮ সালের ইরান-ইরাক যুদ্ধে ইজরায়েল প্রতি বছর ৫০০ মিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রি করত। এই পরিমাণ ২০২৪ সালের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে উল্লেখযোগ্য হতে পারে।
এই সকল সহযোগিতা ১৯৮৮ সালে যুদ্ধে ইরানের বিজয়ের পর এবং আয়াতুল্লাহ খোমেনির প্রভাবের বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গেই বন্ধ হয়ে যায়।
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে এই গোপন সহযোগিতা এখন একটি বিস্ময়কর ইতিহাসের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। যেখানে বর্তমানে পরস্পর শত্রু হিসাবে পরিচিত দেশের মধ্যে একটি সময়ে সহযোগিতার সম্পর্ক ছিল।