সম্প্রতি ইজরায়েলের আক্রমণে ইরানের রাজধানী তেহরানের দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত গোপন সামরিক ঘাঁটিগুলোতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ওই ঘাঁটিগুলি তেহরানের অতীতের পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত। স্যাটেলাইট ছবির বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ইজরায়েলের এই হামলা ইরানের পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি পার্চিন ও খোজির এলাকায় ব্যাপক আঘাত হনেছে।
পার্চিন সামরিক ঘাঁটিতে অবস্থিত কিছু ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (IAEA) মনে করে, সেখানে ইরান অতীতে পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল। যদিও ইরান বরাবরই তাদের পারমাণবিক কর্মসূচিকে শান্তিপূর্ণ দাবি করেছে। IAEA এবং পশ্চিমের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মতে, ২০০৩ সাল পর্যন্ত ইরান পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচি চালিয়ে গিয়েছে।
অন্যদিকে, খোজির সামরিক ঘাঁটিতেও কিছু ক্ষতি হয়েছে, যা বিশ্লেষকদের মতে একটি গোপন টানেল সিস্টেম এবং ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্র হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ইরানের সামরিক বাহিনী এখনও এই হামলায় খোজির বা পার্চিন ঘাঁটির ক্ষতি স্বীকার করেনি। তবে ইরানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শনিবার (২৬ অক্টোবর, ২০২৪) ভোরে ইজরায়েলের এই হামলায় ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় কর্মরত চার জন সেনা সদস্য নিহত হন। একজন অসামরিক ব্যক্তিও প্রাণ হারিয়েছেন।
আরও পড়ুন। ইজরায়েলি হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি, ইরানকে আমেরিকার হুঁশিয়ারি, কী বলছে রাশিয়া?
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি বলেছেন, ইজরায়েলের এই হামলা “অতিরঞ্জিত বা খাটো করে দেখা উচিত নয়”, তবে তিনি কোনো তাৎক্ষণিক প্রতিশোধমূলক আক্রমণের আহ্বান জানাননি। অন্যদিকে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, এই হামলা ইরানে ‘গুরুতরভাবে আঘাত’ করেছে এবং হামলার মাধ্যমে ‘সব লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে।’
ইরানের সামরিক বাহিনী ক্ষতিগ্রস্ত স্থানগুলো চিহ্নিত করেছে ইলাম, খুজেস্তান এবং তেহরান প্রদেশে। ইলাম প্রদেশের তাঞ্জে বিজার প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদন স্থলের স্যাটেলাইট ছবিতে পুড়ে যাওয়া জমি দেখা গেছে, তবে এটি সরাসরি এই হামলার সঙ্গে সম্পর্কিত কিনা তা স্পষ্ট নয়।