ইসলামাবাদ: আজ, শনিবার সকালে পাকিস্তানের বালোচিস্তান প্রদেশের কোয়েটা রেলস্টেশনে ঘটে গেল ভয়াবহ জোড়া বিস্ফোরণ। এই বিস্ফোরণের ঘটনায় অন্তত ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আহত হয়েছেন ৩০ জনের বেশি। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
পাকিস্তানের সরকারি কর্মকর্তা এবং কোয়েটা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এই বিস্ফোরণের কারণে গোটা এলাকায় চরম আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
বিস্ফোরণের সময় ও স্থান
বিস্ফোরণ ঘটে যখন একটি ট্রেন পেশওয়ারের উদ্দেশে রওনা দিতে প্রস্তুত হচ্ছিল। সেই সময় স্টেশনে শতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন, যাঁদের মধ্যে অনেকেই ট্রেনে ওঠার জন্য হুড়োহুড়ি করছিলেন। এমন সময়, ট্রেনের কাছেই একের পর এক দুটি বিস্ফোরণ ঘটে, যার ফলে ট্রেন ও স্টেশনের কাছাকাছি থাকা যাত্রীরা আহত হন। এদিকে, স্টেশনের ভবনেরও কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।
নিরাপত্তা বাহিনীর তৎপরতা
বিস্ফোরণের পরই কোয়েটা পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা ও বম্ব স্কোয়াডের সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। পুলিশ গোটা স্টেশন এলাকা ঘিরে ফেলে এবং আহতদের দ্রুত উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে।
কোয়েট্টার এসএসপি মহম্মদ বালোচ জানিয়েছেন যে, স্টেশনে উপস্থিত বম্ব স্কোয়াডের সদস্যেরা বিস্ফোরণের ধরণ এবং কী ধরনের বিস্ফোরক ব্যবহৃত হয়েছে তা নির্ধারণের চেষ্টা করছেন। স্থানীয় প্রশাসন ইতিমধ্যে গোটা ঘটনাস্থল থেকে বিস্ফোরণের নমুনা সংগ্রহ করে তা বিশ্লেষণের জন্য ল্যাবরেটরিতে পাঠিয়েছে।
হামলার সম্ভাব্য কারণ
বালোচিস্তান প্রশাসন এবং পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী এই বিস্ফোরণের জন্য কে বা কারা দায়ী তা খতিয়ে দেখছে। বালোচিস্তান প্রদেশে দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কার্যকলাপ লক্ষ্য করা গেছে এবং এই অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদী হামলার প্রবণতা রয়েছে। তবে ঠিক কোন গোষ্ঠী বা সংগঠন এই বিস্ফোরণের পিছনে রয়েছে তা এখনো স্পষ্ট নয়। প্রশাসনের মতে, এই হামলার পিছনে স্থানীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী বা আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংস্থা থাকতে পারে।
জনগণের মধ্যে আতঙ্ক
বিস্ফোরণের পর গোটা এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কোয়েটা এবং বালোচিস্তানের বিভিন্ন এলাকার মানুষজন এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পাকিস্তানের সাধারণ জনগণ এই হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন এবং সরকারের কাছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করার দাবি জানিয়েছেন।
সরকারি প্রতিক্রিয়া
বালোচিস্তান সরকারের মুখপাত্র শাহিদ রিন্দ জানিয়েছেন, এই বিস্ফোরণ জনগণের নিরাপত্তার প্রতি এক চরম হুমকি। বালোচিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গেও আলোচনা চলছে। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে প্রশাসন এখন আরও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের পরিকল্পনা করছে।