আমেরিকার প্রেসিডেন্ট-ইলেক্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর পরবর্তী মেয়াদে জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের অধিকার বাতিল করার পরিকল্পনা প্রকাশ করেছেন। ১৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সংবিধান দ্বারা সুরক্ষিত এই অধিকার নিয়ে ট্রাম্প বলেছেন, “এটি হাস্যকর। এটি বদলাতে হবে।” ২০২৫ সালের ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি বিষয়টি নিয়ে এগোবেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন।
মার্কিন সংবিধানের ১৪তম সংশোধনী অনুযায়ী, আমেরিকার মাটিতে জন্মগ্রহণকারী প্রত্যেক ব্যক্তি নাগরিকত্ব পান। এই নীতির সমালোচনা করে ট্রাম্প এবং তার সমর্থকরা দাবি করেছেন, এটি “বার্থ ট্যুরিজম” বা নাগরিকত্বের অপব্যবহারকে ইন্ধন দিচ্ছে।
ট্রাম্প বলেছেন, “সীমান্ত পেরিয়ে এসে সন্তান জন্ম দিলেই নাগরিকত্ব পাওয়া উচিত নয়। এটি বদলানো প্রয়োজন। তবে সংবিধান সংশোধনের জন্য জনগণের কাছে মত চাওয়া হতে পারে।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, সংবিধানের ১৪তম সংশোধনী পরিবর্তনের জন্য প্রেসিডেন্টের সরাসরি ক্ষমতা নেই। এ নিয়ে আইনত জটিলতা দেখা দিতে পারে। সিটিজেনশিপ নীতি পরিবর্তন করার কোনো কার্যকর উদ্যোগ ট্রাম্প তার পূর্ববর্তী মেয়াদে নেননি।
একটি ২০১১ সালের আমেরিকান ইমিগ্রেশন কাউন্সিলের রিপোর্ট অনুযায়ী, জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিল করা হলে প্রতিটি মার্কিন পরিবারের নাগরিকত্ব প্রমাণে জটিলতা দেখা দেবে।
ভারতীয়-আমেরিকানদের উপর প্রভাব
পিউ রিসার্চ সেন্টারের ২০২২ সালের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৪৮ লক্ষ ভারতীয়-আমেরিকান বাস করেন, যার মধ্যে ১৬ লক্ষ জন্মসূত্রে নাগরিক। এই প্রস্তাব কার্যকর হলে তাদের নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠবে।
সমালোচনা ও চ্যালেঞ্জ
ট্রাম্পের পরিকল্পনাকে গুরুত্বের সঙ্গে না নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। কেটো ইনস্টিটিউটের ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যালেক্স নাউরাস্তেহ বলেছেন, “তিনি দীর্ঘদিন ধরে এমন মন্তব্য করছেন। তবে কার্যত কোনো পদক্ষেপ নেননি।”
ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ মার্কিন রাজনীতিতে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। এই নীতির বাস্তবায়ন নিয়ে জনমত বিভক্ত হলেও এটি কার্যকর করা সহজ হবে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিদেশ বিভাগের সব খবর পড়ুন এখানে