Home খবর কলকাতা ‘নাস্তিক হওয়া ভণ্ডামির চেয়ে শ্রেয়’— স্বামীজির ভাবনা উদ্ধৃত করে প্রফেসরের নিয়োগে অনুমতি...

‘নাস্তিক হওয়া ভণ্ডামির চেয়ে শ্রেয়’— স্বামীজির ভাবনা উদ্ধৃত করে প্রফেসরের নিয়োগে অনুমতি হাইকোর্টের

Calcutta High Court on RKM teacher recruitment

সোশ্যাল মিডিয়ায় ধর্ম ও সমাজ নিয়ে ‘কঠোর মতামত’ দেওয়ার অভিযোগে নিয়োগ আটকে দিয়েছিল রামকৃষ্ণ মিশন রেসিডেন্সিয়াল কলেজ (অটোনোমাস), নারেন্দ্রপুর। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত বাতিল করে সহকারী অধ্যাপক তমাল দাশগুপ্তকে নিয়োগের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।

প্রসঙ্গত, তমাল দাশগুপ্ত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর, ২০০৭-এ নেট-জেআরএফ উত্তীর্ণ এবং ২০১৫-তে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি পান। ২০২৩ সালে পশ্চিমবঙ্গ কলেজ সার্ভিস কমিশনের (WBCSC) মেধাতালিকায় নির্বাচিত হয়ে তিনি নারেন্দ্রপুর কলেজ বেছে নেন। তবে কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি ছিল, তাঁর ফেসবুক পোস্টে রামকৃষ্ণ মিশন ও সন্ন্যাসীদের বিরুদ্ধে পক্ষপাতদুষ্ট ও অসম্মানজনক মন্তব্য রয়েছে। তাই নিয়োগ দিলে কলেজের পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ

মঙ্গলবার বিচারপতি পার্থ সারথি চট্টোপাধ্যায় তাঁর রায়ে বলেন, “শুধু সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু মন্তব্য করার কারণে কারও যোগ্যতা খর্ব হয় না। রামকৃষ্ণ মিশনের দর্শন এমনই সর্বজনীন যে তা বিভিন্ন মতাদর্শ, ধর্ম বা বিশ্বাসের মানুষ গ্রহণ করতে পারেন।”

বিচারপতি স্বামী বিবেকানন্দের ‘রাজযোগ’ গ্রন্থ থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন,“ভণ্ড ধার্মিক হওয়ার চেয়ে প্রকাশ্য নাস্তিক হওয়া শ্রেয়।”  তিনি আরও যোগ করেন,
“ধর্ম জিজ্ঞাসার অধিকার প্রতিটি মানুষের আছে, সে নাস্তিক হোক বা অন্য কোনো ধর্মে বিশ্বাসী। তাই ব্যক্তিগত মতামতের কারণে নিয়োগ আটকে রাখা অন্যায্য।”

মামলার প্রেক্ষাপট

  • কলেজের বিশেষ শর্ত ছিল—এই পদে কোনও মহিলা প্রার্থী যোগ্য নন।
  • দাশগুপ্তকে বলা হয়েছিল, তিনি অন্য কলেজের দাবি ছেড়ে দেবেন। এজন্য তিনি দিল্লির স্থায়ী চাকরি ছেড়ে আসেন এবং নিজের ফ্ল্যাটও বিক্রি করেন।
  • কিন্তু কলেজ তাঁকে নিয়োগপত্র দেয়নি। অভিযোগ, কমিশনের সুপারিশকে কলেজ কর্তৃপক্ষ বাধ্যতামূলক মনে করেনি।
  • আদালতে কলেজের দাবি, তাঁরা স্বশাসিত সংস্থা হওয়ায় সুপারিশ মানতে বাধ্য নন। তবে আদালতে তাঁদের পক্ষ থেকে ফেসবুক পোস্টের কোনও নির্দিষ্ট প্রমাণ দেখানো হয়নি।

আদালতের রায়

হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, তমাল দাশগুপ্তকে অবিলম্বে নিয়োগপত্র দিতে হবে। আদালত আরও মন্তব্য করেছে, “একজন মানুষের মূল্যবোধ তার পরিবেশ, ধর্ম, বিশ্বাস ও জীবনযাত্রা দ্বারা গঠিত হয়। মতবিরোধ স্বাভাবিক, তবে প্রতিটি দ্বন্দ্বের মধ্যেই সমাধানের সম্ভাবনা থাকে।”

আরও পড়ুন: শান্তিনিকেতনের কাছে ফুলডাঙার ‘সারদা পাঠশালা’র উদ্যোগে শামিল বালার্ক থিয়েটার

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version