খবর অনলাইন ডেস্ক: এবারের কেন্দ্রীয় বাজেটে কলকাতার চারটি মেট্রো প্রকল্পের জন্য ৪ হাজার কোটি টাকারও বেশি বরাদ্দ করা হয়েছে। ২০২৩-২৪ বাজেটে বরাদ্দ করা হয়েছিল সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকারও কম।
রেল মন্ত্রকের এক সিনিয়র আধিকারিকের কথায়, “রেলের নজর এখন পরিকাঠামো উন্নয়নে। কলকাতার মেট্রো নেটওয়ার্ক-এর ক্ষেত্রেও তা-ই। বাজেট বরাদ্দ দেখে আবার বোঝা যাচ্ছে টাকার কোনো অভাব হবে না। আর বেশির ভাগ জায়গায় জমি সংক্রান্ত সমস্যা মিটে গিয়েছে। সুতরাং কাজ এবার এগোনো উচিত।”
নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর মেট্রো
ভারতীয় রেলের ওয়েবসাইটে যে নথিপত্র আপলোড করা হয়েছে তা থেকে জানা যাচ্ছে, নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর (অরেঞ্জ লাইন) মেট্রোর জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ১৭৯১.৩৯ কোটি টাকা। ২০২৩-২৪ সালের জন্য সংশোধিত বরাদ্দ ছিল ১৭০০ কোটি টাকা। সল্ট লেক হয়ে নিউ গড়িয়া থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত ৩০ কিমি দীর্ঘ এই অরেঞ্জ লাইনে এখন মেট্রো চলছে ৫.৪ কিমি দীর্ঘ পথে নিউ গড়িয়া থেকে হেমন্ত মুখোপাধ্যায় (রুবি মোড়) স্টেশন পর্যন্ত।
এই অরেঞ্জ লাইনে পরবর্তী যে অংশে মেট্রো চলবে তা হল রুবি থেকে বেলেঘাটা পর্যন্ত ৪ কিমি পথে। মার্চের শেষে রেল নিরাপত্তা সংক্রান্ত কমিশনার এই অংশটি পর্যবেক্ষণ করেছেন। আশা করা যায় ২০২৫-এর মধ্যে সেক্টর ৫-এ ঢুকে যাবে এই মেট্রোপথ।
জোকা-এসপ্ল্যানেড মেট্রো
পার্পল লাইন তথা জোকা-এসপ্ল্যানেড রুটে ২০২৩-২৪ সালের জন্য সংশোধিত বরাদ্দ ছিল ৮৫০ কোটি টাকা। এবারের বাজেটে বরাদ্দ অনেকটাই বেড়েছে। বরাদ্দ হয়েছে ১২০৮.৬১ কোটি টাকা। ১৫ কিমি দীর্ঘ এই মেট্রোপথের জোকা থেকে মাঝেরহাট পর্যন্ত মেট্রো চলছে। এই অংশের দৈর্ঘ্য ৭ কিমির কিছু বেশি। মোমিনপুর থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত এই লাইন মাটির তলা দিয়ে যাবে। এই অংশে আছে চারটি স্টেশন – খিদিরপুর, ভিক্টোরিয়া, পার্ক স্ট্রিট এবং এসপ্ল্যানেড।
শেষ ৩টি স্টেশন নির্মাণের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। এবং ময়দানের বেশ খানিকটা অংশ ঘিরে ফেলা হয়েছে। গত মাসে খিদিরপুরে আন্ডারগ্রাউন্ডে মেট্রোপথ নির্মাণের কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে।
জোকা-এসপ্ল্যানেড রুটে সবচেয়ে বড়ো কাঁটা হল প্রস্তাবিত এসপ্ল্যানেড স্টেশনের কাছে বি সি রায় মার্কেট, লোকে যাকে বিধান মার্কেট বলে। এই মার্কেটকে শহিদ মিনারের দক্ষিণে অস্থায়ী ভাবে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা হচ্ছে। এ ব্যাপারে রাজ্য সরকার, পুলিশ এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রক একমত হওয়ায় কাজে গতি এসেছে।
নোয়াপাড়া-বারাসত মেট্রো
১৭ কিমি দীর্ঘ নোয়াপাড়া-বারাসত (ইয়েলো লাইন) মেট্রোপথের জন্য এবারের বাজেটে ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ২০২৩-২৪-এ সংশোধিত বাজেটবরাদ্দ ছিল ৩০৪.৮২ কোটি টাকা।
নোয়াপাড়া-বারাসত রুটে নোয়াপাড়া-দমদম ক্যান্টনমেন্ট অংশে আগামী অক্টোবর থেকেই মেট্রো চালু হয়ে যেতে পারে। যশোর রোড পর্যন্ত মেট্রোপথ পিলারের উপর দিয়ে গিয়েছে। তার পর তার পাতালপ্রবেশ। মেট্রো আধিকারিকরা বলছেন, এ বছরের শেষ দিকে বিমানবন্দর পর্যন্ত মেট্রোপথ বিস্তৃত হয়ে যাবে।
কিন্তু এর পরে কী হবে তা নিয়ে অস্পষ্টতা রয়েছে। নিউ ব্যারাকপুর-বারাসত অংশে জমি নিয়ে ব্যাপক সমস্যা আছে। এখানে হাজার হাজার দখলদারকে সরাতে হবে।
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো
“১৬.৫ কিমি দীর্ঘ ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো (গ্রিন লাইন) এবারের বাজেটে পেয়েছে ৯০৬ কোটি টাকা” – যারা এই প্রকল্প রূপায়ণের দায়িত্বে রয়েছে সেই কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশনের এক আধিকারিক এই তথ্য দিয়েছেন। তিনি জানান, “এ বছরের ফেব্রুয়ারির অন্তর্বর্তী বাজেটে যা বরাদ্দ করা হয়েছিল সেই পরিমাণই আছে।”
বুধবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানান, চলতি আর্থিক বছরে পশ্চিমবঙ্গে রেলের জন্য ১৩৯৪১ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
কলকাতার মহাজাতি সদনের সামনে মিনিবাসে আগুন, নামিয়ে দেওয়া হল যাত্রীদের