কলকাতা: রবিবার রাত ১২টা নাগাদ গার্ডেনরিচের আজহার মোল্লা বাগানে আচমকা ভেঙে পড়ে নির্মীয়মাণ পাঁচতলা একটি বাড়ি। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত বিপর্যয়ের বলি গিয়ে দাঁড়ায় ১১-য়।
মুহূর্তে ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে যান বাসিন্দারা। নির্মীয়মাণ বহুতলটিতে থাকা ঠিকা নির্মাণ শ্রমিকরা বেরিয়ে আসতে পারেননি। সোমবার পর্যন্ত মৃতদের নাম শামা বেগম (৪৫), হাসিনা খাতুন (৬০), আকবর আলি (৩৪), রিজওয়ান আলম (২৩), মহম্মদ ওয়াশিক (১৯), মহম্মদ ইমরান (২৭), রমজান আলি (৫৫), নাসিমুদ্দিন শেখ (২৪), শেখ আব্দুল্লাহ (১৮)। মঙ্গলবার রাতে আরও এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হয়। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃতের নাম মহম্মদ জামাল (৪০)। মঙ্গলবার পর্যন্ত গার্ডেনরিচকাণ্ডে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ১০।
বৃহস্পতিবার রাত ২টো ৫০ মিনিট নাগাদ আবদুল রউফ নিজামি ওরফে শেরু নিজামের (৪৫) দেহ উদ্ধার করা হয়। এলাকায় তিনি ‘শেরু চাচা’ নামে পরিচিত ছিলেন। তাঁর দেহ এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই দেহ শনাক্ত করেন তাঁর ছেলেরা।
এ দিকে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন, মৃতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ ও আহতদের জন্য ১ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে।
এই ঘটনায় শোকজ করা হয় ১৫ নম্বর বরোর এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার, সাব অ্যাসিসট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার ও অ্যাসিসট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারকে। তিনজনকেই জানাতে হবে, কেন এমন ঘটল? এ ছাড়া একজন প্রোমোটারও গ্রেফতার হয়েছেন। মূলত দু’জনের পার্টনারশিপ ছিল এই নির্মাণে। যিনি গ্রেফতার হয়েছেন, তাঁর নাম মহম্মদ ওয়াসিম।
এ দিকে, নির্মীয়মাণ বাড়িটি ভেঙে পড়ার পর ওই এলাকার একাধিক নির্মাণ নিয়ে অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, ঘটনাস্থলের আশপাশে থাকা ছ’টি বাড়ি আপাতত চিহ্নিত করা হয়েছে। ওই বাড়িগুলির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে প্রাথমিক ভাবে কাজ শুরু করেছে পুরসভা। ইতিমধ্যে ওই ছ’টি বাড়িকে কলকাতা পুরসভার তরফে নোটিস পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, যে সময় ঘটনাটি ঘটেছে, সেই সময় এলাকায় প্রায় সবাই ঘুমিয়ে ছিলেন। হঠাৎই ভয়াবহ শব্দে ঘুম ভেঙে যায় তাঁদের। বিকট শব্দে ঘুম ভেঙে যাওয়ার পর তড়িঘড়ি বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন সকলে। দেখতে পান ধুলোয় ভরে গিয়েছে চারিদিক। ধ্বংসস্তূপের আকারে পড়ে থাকতে দেখা যায় নির্মীয়মান বহুতলটিকে।