৩৮ দিন ধরে চলা ডাক্তারদের বিক্ষোভ অবশেষে সাফল্যের মুখ দেখল। কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ডাক্তারদের প্রতিনিধি দলের বৈঠকে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।ডাক্তারদের দাবি মতো সরানো হচ্ছে, কলকাতার পুলিশ কমিশনার , ডিসি (নর্থ) এবং দুই স্বাস্থ্যকর্তাকে।
বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ডাক্তারদের প্রতিনিধি দেবাশিস হালদার জানান, “আন্দোলনকারীদের কাছে নতস্বীকার করল রাজ্য সরকার। ৩৮ দিন পর আমাদের জয়। এই জয় সাধারণ মানুষ, চিকিৎসক, নার্স সকলের। সবাই মিলে পাশে না থাকলে এই জয় সম্ভব ছিল না। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে ধন্যবাদ।”
তবে ডাক্তারদের তরফ থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, শুধুমাত্র টাস্ক ফোর্স গঠন করে এই সমস্যার সমাধান হবে না। দেবাশিস হালদার বলেন, “স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে যে দুর্নীতি এবং থ্রেট কালচার তৈরি হয়েছে তা সমূলে উপড়ে ফেলতে হবে। টাস্ক ফোর্সের পাশাপাশি এ বিষয়ে ভবিষ্যতে আলোচনার পথ খোলা রয়েছে।”
ডাক্তারদের দাবি মেনে সিপি বদলাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী, অপসারণের সিদ্ধান্ত ২ স্বাস্থ্যকর্তাকেও
বৈঠকে ডাক্তারদের কিছু দাবি পূরণ হয়েছে বলে জানানো হলেও, আন্দোলনকারীরা এখনও সন্তুষ্ট নন। ডাক্তারদের এক প্রতিনিধি বলেন, “যেটুকু দাবি আমরা পূরণ করিয়ে আনতে পেরেছি সেটাও আমাদের আন্দোলনের জয়। এটুকু পেতে আমাদের ৩৮ দিন সময় লেগে গেল। আমরা বিক্ষোভ মঞ্চে ফিরে যাচ্ছি এবং সেখানে আন্দোলনকারী ডাক্তারদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।”
তারা আরও জানান, সুপ্রিম কোর্টে মঙ্গলবার শুনানি রয়েছে এবং সেই শুনানির পরই আন্দোলনের ভবিষ্যৎ ঠিক করা হবে। যতদিন পর্যন্ত সরকারের দেওয়া আশ্বাস বাস্তবায়িত না হয়, ততদিন পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। ডাক্তারদের স্পষ্ট বক্তব্য, “আমাদের দাবিগুলি কবে এবং কীভাবে বাস্তবায়িত হয় তার উপরই আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ভর করছে।”
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় টাস্ক ফোর্স গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও, ডাক্তারদের মতে, এটা একমাত্র সমাধান নয়। ভবিষ্যতে আরও বৃহত্তর আলোচনা এবং পদক্ষেপের প্রয়োজন রয়েছে বলে তারা জানিয়ে দিয়েছেন।
সরকারের সঙ্গে একাধিক বৈঠক ব্যর্থ হওয়ার পরে, সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাসভবনে আলোচনা শুরু হয়। রাজ্যের মুখ্যসচিবের আমন্ত্রণে জুনিয়র ডাক্তাররা বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠকে প্রধানত স্বাস্থ্য খাতে চলমান দুর্নীতি, প্রশাসনিক সমস্যাগুলি এবং চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিয়ে আলোচনা হয়।