কলকাতা পুরসভা এবার নির্মাণ প্রক্রিয়ায় বড়সড় পরিবর্তন আনতে চলেছে। প্রায় ১৬ বছর পর পুরসভার বিল্ডিং আইনে আসছে সংশোধনী। নতুন খসড়া আইনে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, নির্দিষ্ট কিছু শর্ত পূরণ করলে আবাসন নির্মাণে বাড়তি ১০ শতাংশ এফএআর (FAR) পাওয়া যাবে। এতদিন এই বাড়তি সুবিধা ছিল মাত্র পাঁচ শতাংশ পর্যন্ত।
পুরসভার পক্ষ থেকে প্রকাশিত বিল্ডিং আইন সংশোধনের খসড়ায় বলা হয়েছে—
- যদি কোনও জমির সামনের রাস্তা ১২ মিটার বা তার বেশি চওড়া হয়,
- যদি সেই জমি মেট্রোরেল করিডরের এক কিলোমিটারের মধ্যে থাকে,
- কিংবা যদি নির্মাণটি গ্রিন বিল্ডিং হয়,
তাহলে এক বা একাধিক শর্ত পূরণ করলেই ১০ শতাংশ বাড়তি এফএআর মিলবে। এর ফলে নির্মাণের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত তল বা আয়তনের সুযোগ তৈরি হবে।
পুরসভার এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, এতদিন পর্যন্ত তিনটি শর্ত পূরণ করলেও শুধুমাত্র একটি শর্ত পূরণের ভিত্তিতে পাঁচ শতাংশ বাড়তি FAR দেওয়া হতো। এবার একাধিক শর্ত পূরণ হলে ১০ শতাংশ FAR অনুমোদনের ব্যবস্থা থাকছে।
নতুন নিয়ম ‘স্ট্যান্ড অ্যালোন বিল্ডিং’, ফ্ল্যাট কিংবা বড় আবাসন—সব ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে। এমনকি কোনও জমিতে পুকুর থাকলে তা সংরক্ষণ করে নির্মাণ করলেও বাড়তি FAR পাওয়ার সংস্থান থাকছে নতুন আইনে।
গাড়ি পার্কিংয়ের সমস্যার সমাধানে নতুন বিধান
নতুন আইনে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন হল ‘ভিজিটরস পার্কিং’ বাধ্যতামূলক করা। ১৫ হাজার বর্গমিটারের বেশি আয়তনের আবাসনে এই নিয়ম লাগু হবে। উদ্দেশ্য, অতিথিদের গাড়ি রাস্তায় রাখতে না হয়ে আবাসনের মধ্যেই নির্দিষ্ট জায়গা দেওয়া।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এতদিন এসব নিয়ম শুধুমাত্র নির্দেশিকা আকারে কার্যকর হতো। এবার সেগুলিকে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে, যাতে প্রয়োগে কোনও সমস্যা না হয়।
২০০৯ সালে শেষবার বিল্ডিং আইনে সংশোধন হয়েছিল। দীর্ঘ ১৬ বছর পর এবার পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের পথে হাঁটছে কলকাতা পুরসভা। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, এই পদক্ষেপে যেমন সাধারণ নাগরিকরা সুবিধা পাবেন, তেমনই ছোট-বড় নির্মাণ সংস্থা এবং পরিবেশবান্ধব নির্মাণে উৎসাহী উদ্যোক্তাদেরও বাড়তি সুবিধা মিলবে।
পড়ুন: নিউ মার্কেট চত্বরে দখল সরাতে ফিরছে ‘হালা ব্রিগেড’, পয়লা বৈশাখের পর অভিযান শুরু