আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পর, কলকাতা পুলিশ একাধিক বিশেষ নির্দেশিকা জারি করেছে। এই নির্দেশিকাগুলির মধ্যে অন্যতম হল, কোনও অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি বা মহিলার দেহ উদ্ধারের ক্ষেত্রে সঙ্গে সঙ্গে অভিযোগ দায়ের করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। যদি ঘটনাস্থলে অভিযোগ দায়েরের জন্য কেউ না থাকেন, তবে পুলিশকেই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা দায়ের করতে হবে। এই নতুন নিয়মাবলী কার্যকর করে পুলিশ তদন্তে জোর দেওয়ার পাশাপাশি নিশ্চিত করতে চায় যে, কোনও অপরাধের প্রমাণ নষ্ট না হয় এবং তথ্যপ্রমাণ সঠিকভাবে সংরক্ষিত থাকে।
দেহ উদ্ধারের পরবর্তী পদক্ষেপগুলির মধ্যে আরেকটি উল্লেখযোগ্য নির্দেশ হলো, ঘটনাস্থল প্লাস্টিক টেপ দিয়ে ঘিরে রাখতে হবে। এই প্রক্রিয়া অনুসরণ করলে ভবিষ্যতে তদন্তের সময় কোনও সমস্যা হবে না বলে মনে করছে কলকাতা পুলিশ। একইসঙ্গে, সাধারণ মানুষের সঙ্গে পুলিশের সম্পর্ক উন্নত করার উপরও বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। পুলিশের একটি অংশের মতে, থানায় সাধারণ মানুষের প্রবেশ এখনও অনেক ক্ষেত্রেই ভীতিকর হয়ে ওঠে, যা সমাজ এবং পুলিশের উভয়ের জন্যই ক্ষতিকর। এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে নিচু তলার পুলিশকর্মীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়ারও প্রস্তাব করা হয়েছে যাতে তাঁরা সাধারণ মানুষের সঙ্গে যথাযথভাবে কথা বলতে পারেন।
এই নির্দেশিকাগুলি বাস্তবায়নের পাশাপাশি কলকাতা পুলিশ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো খবর এবং অপ্রীতিকর মন্তব্যের উপরও নজরদারি চালাচ্ছে। আরজি কর কাণ্ডের পর সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন মিথ্যা এবং অপ্রীতিকর তথ্য তদন্তে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এর ফলে নির্যাতিতা তরুণী এবং তাঁর পরিবারের সম্মানহানি হচ্ছে। এই কারণে, লালবাজারের তরফে বিশেষ নজরদারি চালাতে সাইবার ক্রাইম গোয়েন্দাদের নিয়োগ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ৯ অগস্ট আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের চারতলায় সেমিনার হল থেকে এক তরুণী চিকিৎসকের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। পরে জানা যায়, তাঁকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। প্রথমে কলকাতা পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত করলেও, হাইকোর্টের নির্দেশে চারদিন পর তদন্তভার সিবিআই-এর হাতে যায়। এখনও পর্যন্ত একজন সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যিনি সিবিআই হেফাজতে রয়েছেন।