২১ জুলাইয়ের শহিদ দিবসের সভা ঘিরে কলকাতা হাই কোর্টের কড়া পর্যবেক্ষণের আবহেই রবিবার, অর্থাৎ সভার আগের দিন ধর্মতলায় সভামঞ্চ পরিদর্শনে গিয়ে সুর চড়ালেন তৃণমূল সুপ্রিমো ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুলিশের অনুমতি ছাড়া নবান্ন অভিযানের প্রসঙ্গ তুলে মমতা প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন, “তখন তো কোনও আপত্তি থাকে না, তবে আমাদের নিয়েই এত আপত্তি কেন?”
১৯৯৩ সালের সেই রক্তাক্ত ২১ জুলাইয়ের ঘটনার স্মৃতি উসকে দিয়ে মমতা বলেন, “সেই সময় সিপিএম কাউকে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে দিত না। আমরা চাইছিলাম সচিত্র পরিচয়পত্র। আমাদের আন্দোলন দমানোর ক্ষমতা ছিল না সিপিএমের। গুলি চালিয়ে ১৩ জনকে শহিদ করেছিল ওরা। ৩৩ বছর ধরে এই কর্মসূচি এখানে হয়, কারণ এখানেই রক্ত ঝরেছিল। একটাই প্রোগ্রাম, শহিদদের স্মরণে, সেটাই আমরা ধর্মতলায় করি।”
তাঁর অভিযোগ, “আমাদের দেখে ওদের প্রোগ্রাম করতে হয়। কিন্তু আমরা কাউকে দেখে প্রোগ্রাম করি না। বরং আমাদের থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত।”
এই সভা ঘিরে ইতিমধ্যেই যানজট ও নাগরিক দুর্ভোগ নিয়ে মামলা করেছে বামপন্থী আইনজীবী সংগঠন অল ইন্ডিয়া লয়ার্স ইউনিয়ন (AILU)। আদালতে অভিযোগ করা হয়, এই কর্মসূচির জন্য ফেরি বন্ধ থাকে, কোর্টের কাজ স্থগিত রাখতে হয় এবং বহু মানুষ অফিসে পৌঁছতে পারেন না। সেই প্রেক্ষিতে কলকাতা হাই কোর্ট মিছিলের উপর সময়সীমা বেঁধে দিয়ে নির্দেশ দেয়, সোমবার সকাল ৮টার পর কোনও মিছিল শহরে ঢুকবে না, সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত সভাস্থলের পাঁচ কিলোমিটার এলাকায় মিছিল সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে। পুলিশকে যানজট নিয়ন্ত্রণে রাখার দায়িত্ব দেওয়া হয়।
শুধু তাই নয়, বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের পর্যবেক্ষণ, “আগামী বছর থেকে শহিদ মিনার, ব্রিগেড বা অন্য কোথাও এই সভা আয়োজনের কথা ভাবতে হবে।” যদিও এটি আদেশ নয়, শুধুমাত্র আদালতের পর্যবেক্ষণ।
এই পরিস্থিতিতে মমতা দলের কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, “ঝড়-জল হলেও শান্তিপূর্ণভাবে আসবেন। লাখ লাখ মানুষ ইতিমধ্যেই এসেছেন। কালও জেলাগুলো থেকে অনেকে আসবেন। সাধারণ মানুষের হয়তো একটু অসুবিধা হবে কাল।”