মোমিনপুর থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মেট্রো রেলের কাজ চালিয়ে যাওয়ার পথ সুগম হলো। বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ একটি জনস্বার্থ মামলা খারিজ করে দিয়েছে। এই মামলার মাধ্যমে ময়দান এলাকায় গাছ কাটার কারণে মেট্রোর কাজে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ চাওয়া হয়েছিল।
গত বছরের অক্টোবরে ‘পিপল ইউনাইটেড ফর বেটার লিভিং ইন কলকাতা’ নামে একটি সংগঠন জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিল। তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল যে, মোমিনপুর থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মেট্রোর কাজের জন্য ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল এলাকায় ৭০০ গাছ কাটা পড়তে পারে। তাদের দাবি ছিল, ময়দান এলাকা শহরের ফুসফুস এবং সেখানে এত গাছ কাটা হলে পরিবেশের গুরুতর ক্ষতি হবে। মামলাকারীরা উল্লেখ করেছিলেন যে, ১৯৫০ সালের পর থেকে শহরের তাপমাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
মামলার প্রেক্ষিতে বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য এবং বিভাসরঞ্জন দে-র ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশে ময়দান এলাকায় মেট্রোর কাজের জন্য গাছ কাটা আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছিল। বেঞ্চ তাদের পর্যবেক্ষণে জানিয়েছিল, মেট্রো সম্প্রসারণের জন্য যতগুলি গাছ কাটার প্রস্তাব ছিল, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। তারা আরও উল্লেখ করেছিলেন যে, ময়দানে প্রচুর মানুষ রোজ প্রাতর্ভ্রমণে এবং ঘুরতে আসেন। ময়দান শুধুমাত্র ঘোরার জায়গা নয়, এটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ একটি সবুজ এলাকা।
তবে বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ সেই স্থগিতাদেশ খারিজ করে দিয়েছে। এর ফলে মোমিনপুর থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মেট্রো রেলের কাজ অব্যাহত রাখা সম্ভব হবে। মেট্রো প্রকল্পের আধিকারিকরা আশা প্রকাশ করেছেন যে, এই সিদ্ধান্তের ফলে প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে যাবে এবং শহরের পরিবহন ব্যবস্থার উন্নতি হবে।
এই রায়ের পর ‘পিপল ইউনাইটেড ফর বেটার লিভিং ইন কলকাতা’ সংগঠনের প্রতিনিধিরা তাদের হতাশা প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, “পরিবেশের গুরুত্ব আমরা ভুলতে পারি না। শহরের তাপমাত্রা দিন দিন বাড়ছে। গাছ কাটার ফলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হবে।”
তবে, মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছে যে, তারা পরিবেশের ক্ষতি পূরণের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে গাছ রোপণ করবে।