আসন্ন কালীপুজো ও দীপাবলি উপলক্ষে বাজি পোড়ানোয় কড়া বিধিনিষেধ জারি করল কলকাতা পুলিশ। লালবাজারের নির্দেশ অনুযায়ী, এ বছর শুধুমাত্র সবুজ বাজি (Green Firecrackers) পোড়ানো যাবে, তাও নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে। কলকাতায় সোমবার, ২০ অক্টোবর রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্তই বাজি পোড়ানোর অনুমতি মিলবে। ওই সময়ের বাইরে, দিন বা রাতের অন্য কোনও সময় বাজি পোড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
একই সঙ্গে, ছটপুজোর দিন (২৮ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সবুজ বাজি পোড়ানো যাবে বলে জানিয়েছে লালবাজার।
পুলিশের তরফে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, নিয়ম ভাঙলে আইন অনুযায়ী কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। থানাগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, তারা যেন সুপ্রিম কোর্ট, কলকাতা হাই কোর্ট এবং রাজ্যের দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নির্দেশ মেনে পদক্ষেপ নেয়।
এ বিষয়ে পুলিশ সূত্রে খবর, অবৈধ বাজি তৈরি ও বিক্রি রোধে নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে। চলতি সপ্তাহেই লালবাজারে বৈঠক হয়েছে। সেখানে পুলিশ আধিকারিকদের জানানো হয়— এ বছর নিষিদ্ধ শব্দবাজির ব্যবহার সম্পূর্ণ রুখতে হবে। প্রতিটি থানাকে তাদের এলাকায় শব্দদূষণ রোধে বিশেষ টহলদারি ও নজরদারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
হার্ই কোর্টের বিশেষ নির্দেশ
এরই মধ্যে, বৃহস্পতিবার কলকাতা হাই কোর্টও বাজি সংক্রান্ত একটি মামলায় গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দিয়েছে।
ভবানীপুরের সাউথ সিটি গ্যালাক্সি অ্যাপার্টমেন্টে বাজি পোড়ানো নিয়ে আদালতে অভিযোগ করেছিলেন বাসিন্দা সঞ্জয় মেহতা। তিনি জানান, দীপাবলিতে ওই আবাসনের ছাদে বাজি পোড়ানোর অনুমতি দেওয়ায় নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে।
বিচারপতি স্মিতা দাস দে নির্দেশ দিয়েছেন, ভবানীপুর থানার ওসি যেন যথাযথ নজরদারি বজায় রাখেন এবং সময়ে সময়ে খোঁজ নেন যাতে ওই অ্যাপার্টমেন্টের খোলা ছাদে বাজি পোড়ানো না হয়। আদালত আরও নির্দেশ দিয়েছে, আবাসনের বাসিন্দাদের রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের (WBPCB) নির্দেশিকা মেনে চলতে হবে।
পুলিশের জমা দেওয়া রিপোর্টে জানানো হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে সেখানে বাজি পোড়ানোর কোনও ঘটনা ঘটেনি, এবং উৎসবের সময় যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, তার জন্য প্রয়োজনীয় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
সব মিলিয়ে, দীপাবলি ও কালীপুজোর উৎসবেও সবুজ বাজির সীমিত ব্যবহার এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই এখন প্রশাসনের প্রধান লক্ষ্য।
আরও পড়ুন: আলোর উৎসবের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত শহর, কালীপুজোর আগে শেষ টান শিল্পীদের তুলিতে