আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক ও জুনিয়র ডাক্তাররা তাঁদের সহকর্মী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় ন্যায়বিচার চাইছেন, তবে হিংসাত্মক আন্দোলনের পথে তাঁরা হাঁটতে রাজি নন। ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফোরাম’ (ডব্লিউবিজেডিএফ)-এর তরফে তাঁরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে, হিংসা নয়, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনই তাঁদের পথ। তাঁদের মতে, সহযোগিতার মাধ্যমে ন্যায়বিচার অর্জন সম্ভব, আর তার জন্য পুলিশের সঙ্গে সংঘাত বা হিংসা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
এদিকে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইস্তফার দাবিতে এবং আরজি কর-কাণ্ডের বিচারের দাবিতে ‘পশ্চিমবঙ্গের ছাত্র সমাজ’-এর নবান্ন অভিযানে মঙ্গলবার কলকাতা ও হাওড়ার বিভিন্ন এলাকায় চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে, এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস, ও জলকামান ব্যবহার করতে হয়েছে। এর প্রতিবাদে বুধবার বিজেপি ১২ ঘণ্টার বাংলা বন্ধের ডাক দিয়েছে। তবে ডব্লিউবিজেডিএফ এই বন্ধকে সমর্থন করেনি।
আরজি করের নির্যাতিতাকে টিএমসিপির প্রতিষ্ঠা দিবস উৎসর্গ মমতার, যুব সমাজকে দিলেন বিশেষ বার্তাও
ডব্লিউবিজেডিএফ-এর সদস্যরা জানান, তাঁদের দাবি ন্যায়বিচার এবং নিরাপত্তা, কিন্তু তাঁরা কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আন্দোলনে সমর্থন জানাচ্ছেন না। মঙ্গলবার আরজি করের এক জুনিয়র চিকিৎসক বলেন, ‘‘ডব্লিউবিজেডিএফের তরফে বিচারের দাবিতে বুধবার পৃথক কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছে। শ্যামবাজার থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ মিছিল করে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাব।’’
ইতিমধ্যে আরজি কর হাসপাতালের সুরক্ষায় সিআইএসএফ মোতায়েন করা হয়েছে এবং হাসপাতাল চত্বরে কোনও জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তাই নির্যাতিতার ন্যায়বিচারের দাবিতে আয়োজিত কনভেনশনটি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। গত ২১ আগস্ট, সিজিও কমপ্লেক্স থেকে স্বাস্থ্য ভবন পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে একটি মিছিল করেছিলেন আরজি করের চিকিৎসকরা, এবং সেই মিছিলেও কোনো অশান্তি হয়নি।
তবে, আরজি করের ধর্ষিতা এবং নিহত চিকিৎসকের পরিবার মঙ্গলবার দুপুরে তাঁদের সমর্থন প্রকাশ করেছেন চিকিৎসকদের আন্দোলনের প্রতি। তাঁদের আশঙ্কা, আন্দোলন থেমে গেলে বিচারপ্রক্রিয়া শ্লথ হয়ে যেতে পারে। চিকিৎসকরাও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে জারি রাখতে বদ্ধপরিকর।