পিথোরাগড় (উত্তরাখণ্ড): পর্যটকরা বিস্মিত। ওম পর্বতের মাথা থেকে বরফ সম্পূর্ণ উধাও। গত সপ্তাহে এই ঘটনা ঘটেছে। পর্যটকরা ভেবে আকুল। এরকম তো কখনও হয় না। ওম পর্বতের শীর্ষ বরফহীন, এ ধরনের ঘটনা এই প্রথম ঘটল।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হিমালয়ের উপরের দিকে অঞ্চলে গত পাঁচ বছরে বরফপাত কম হচ্ছে। তার সঙ্গে বৃষ্টিপাতও বেশ কম হচ্ছে। ফলে বেড়েছে বিশ্ব উষ্ণায়ণ। আর তার সঙ্গে গাড়ির দূষণ তো রয়েছেই। তারই ফলে এই কাণ্ড ঘটছে। বিশেষজ্ঞরা এই ব্যাপারটি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
পর্যটনের সঙ্গে জড়িত এক আধিকারিক বলেন, পর্বতশীর্ষ যদি দীর্ঘদিন ধরে বরফহীন থাকে, তাহলে এ অঞ্চলের পর্যটনের উপর তার প্রভাব পড়তে পারে।
ব্যাস উপত্যকার একটি জনপ্রিয় পর্যটনস্থল ১৪ হাজার ফুট উচ্চতার ওম পর্বত। পর্বতশীর্ষের বরফ এমন আকার ধারণ করে যেন মনে হয় ‘ওঁ’ লেখা আছে। তাই এই পর্বতের নাম ওম পর্বত।
এক পর্যটক বলেন, “১৬ আগস্ট ওখানে গিয়েছিলাম। যে পর্বতশীর্ষ সবসময়ে বরফে ঢাকা থাকে সেই ওম পর্বতকে বরফহীন দেখে মনটা খুব খারাপ হয়ে গেল।”
গুঞ্জি গ্রামের বাসিন্দা ঊর্মিলা সানোয়াল বরফহীন ওম পর্বতের ছবি তুলেছেন। তিনি বলেন, ‘ওঁ’ আকারের পর্বতের মাথায় বরফ না থাকলে তাকে চেনাই যায় না।”
ধরচুলায় আদি কৈলাস যাত্রার বেস ক্যাম্পের দায়িত্বে যিনি রয়েছেন সেই ধন সিং বিশ্ত বলেন, “কুমায়ুন মণ্ডল বিকাশ নিগমে (কেএমভিএন) ২২ বছর ধরে চাকরি করছি। এই প্রথম বরফহীন ওম পর্বত দেখলাম।”
তবে স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকদের মনে আশা জাগিয়ে গত সোমবার আবার বরফ দেখা গিয়েছে ওম পর্বতে। পিথোরাগড়ের জেলা প্রশাসন ও কেএমভিএন-এর কর্মীরা, যাঁরা বরফহীন ওম পর্বতের ভাইরাল ছবি দেখে বিস্মিত হয়ে গিয়েছিলেন, তাঁরা পর্বতশীর্ষে তুষার দেখে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন।
আলমোড়ার জিবি পন্থ ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হিমালয়ান এনভায়রনমেন্ট-এর অধিকর্তা সুনীল নৌটিয়াল বলেন, হিমালয়ের পরিবেশ সংবেদনশীল অঞ্চলে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার জন্যই বরফ উধাও হয়ে গিয়েছে। বিশ্ব উষ্ণায়ণের পাশাপাশি এই বরফহীনতার একটা বড়ো কারণ এই অঞ্চলে জ্বালানি-চালিত গাড়ির চলাচল অত্যধিকভাবে বেড়ে যাওয়া।
গত অক্টোবরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জোলিংকং-এ ঘুরে যাওয়ার পর থেকে এই অঞ্চলে পর্যটকের সংখ্যা কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে। ব্যাস উপত্যকার গারবিয়াং গ্রামের বাসিন্দা কৃশ গারবিয়াল বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর সফরের পর জোলিংকং থেকে আদি কৈলাসের দর্শন পাওয়ার জন্য আগত পর্যটকের সংখ্যা ১০ গুণ বেড়ে গিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, হিমালয়ের এই সংবেদনশীল অঞ্চলে জ্বালানি-চালিত গাড়ি চলাচলে রাশ টানা উচিত।
আরও পড়ুন
বন্ধে সমর্থন নেই, শান্তিপূর্ণ পথেই আন্দোলন জারি রাখতে চায় আরজি কর