আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডা. সন্দীপ ঘোষ অবশেষে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। জুনিয়র চিকিৎসকদের লাগাতার আন্দোলনের চাপের মুখে সোমবার সকালে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এটি তাঁর নিজস্ব সিদ্ধান্ত এবং স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন। তবে, তাঁর ইস্তফার পরেও আন্দোলনকারী ছাত্রছাত্রী এবং জুনিয়র চিকিৎসকরা লিখিত পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার দাবি তুলেছেন এবং মুখের কথায় তাঁরা পদত্যাগ মানতে নারাজ।
সোমবার সাংবাদিকদের সামনে নিজের ইস্তফা ঘোষণার সময় ডা. ঘোষ বলেন, ‘‘আমার পদত্যাগই ছাত্রছাত্রীদের কাম্য ছিল এবং সারা রাজ্যের এই দাবি ছিল বলে মনে হয়েছে। আশা করি, এ বার ছাত্রছাত্রী এবং জুনিয়র চিকিৎসকেরা তাঁদের কাজে ফিরে যাবেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘গত কয়েক দিনে আমি এবং আমার পরিবার যে মানসিক যন্ত্রণা সহ্য করেছি, তা অসহনীয়। তাই, বাবা হিসাবে আমি লজ্জিত হয়ে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’
সোমবার আরজি করের বাইরে দাঁড়িয়েই সন্দীপ ঘোষ বলেন, “ঘটনার পর ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা পৌঁছে যান ঘটনার ২ ঘণ্টার মধ্যে। পুলিশ পৌঁছে যায়। সিপিও আসেন। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আন্ডারে সব কিছুই কমপ্লিট হয়ে যায় খুবই অল্প সময়ের মধ্যে। সে রকম যদি হত, আমার হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ ১ ঘণ্টার মধ্যে আমি পুলিশকে হ্যান্ডওভার করতাম না। অনেক ক্ষেত্রে দোষীদের ধরতেই পুলিশের অনেক সময় লেগে যায়। এক্ষেত্রে কিন্তু বেশি সময় লাগেনি। ১ জনকে অন্তত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ধরে ফেলেছে।”
যদিও তিনি পদত্যাগ করেছেন, সন্দীপ ঘোষের মতে, আরজি করের এই ঘটনার পেছনে রয়েছে ‘রাজনীতির খেলা’। তাঁর মতে, এই ঘটনা নিয়ে কিছু বিরুদ্ধ গোষ্ঠী রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কাজ করছে। তবে, তিনি সরকারি কর্মচারী হিসেবে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত নিজের দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানিয়েছেন।
অধ্যক্ষের পদত্যাগের পরেও আন্দোলনকারীরা তাঁদের দাবি থেকে সরছেন না। আন্দোলনকারীদের মধ্যে এক জন জানান, ‘‘আমরা মুখের কথায় বিশ্বাস করি না। আমাদের লিখিত পদত্যাগপত্র চাই। আমাদের একাধিক দাবি রয়েছে এবং সব দাবি মেনে নেওয়া না হলে আন্দোলন চলবে।’’
উল্লেখ্য, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের এক মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ করে হত্যা করার ঘটনার প্রতিবাদে গত শুক্রবার থেকে আন্দোলনে নেমেছেন বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালের জুনিয়র চিকিৎসকেরা। প্রথমে তাঁরা জরুরি বিভাগ বাদে অন্যান্য বিভাগে কর্মবিরতি ঘোষণা করেন এবং সোমবার থেকে জরুরি বিভাগেও কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়। তাঁদের দাবি, উপযুক্ত তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের কঠোর শাস্তি প্রদান এবং হাসপাতালে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
📰 আমাদের পাশে থাকুন
নিরপেক্ষ ও সাহসী সাংবাদিকতা টিকিয়ে রাখতে খবর অনলাইন আপনার সহায়তা প্রয়োজন। আপনার ছোট্ট অনুদান আমাদের সত্য প্রকাশের পথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।
💠 সহায়তা করুন / Support Us