অ্যাপার্টমেন্ট বা বহুতল আবাসনে নতুন করে কোনও নির্মাণ করতে হলে সব ফ্ল্যাটমালিকের সম্মতি প্রয়োজন। শুক্রবার সাপ্তাহিক ফোন-ইন অনুষ্ঠান ‘টক টু মেয়র’-এ এক অভিযোগের জবাবে এই নিয়ম স্পষ্ট করে দিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
উত্তর কলকাতার বাগমারির সতকারি মিত্র লেনের এক বাসিন্দা মেয়রের কাছে অভিযোগ জানান। জবাবে হাকিম বলেন, “ফ্ল্যাট হস্তান্তর হয়ে গেলে এবং রেজিস্ট্রেশন সম্পূর্ণ হলে প্রত্যেক ফ্ল্যাটমালিক ওই সম্পত্তির সহ-মালিক হয়ে যান। এর পরে কোনও নতুন নির্মাণ করতে হলে প্রত্যেক সহ-মালিকের নো-অবজেকশন সার্টিফিকেট (NOC) লাগবে।”
তিনি আরও ব্যাখ্যা করেন, “বিল্ডারের কাছে যদি অব্যবহৃত ফ্লোর এরিয়া রেশিও (FAR) থাকে এবং তিনি অতিরিক্ত নির্মাণ করতে চান, তবে ফ্ল্যাটমালিকদের লিখিত সম্মতি ছাড়া তা সম্ভব নয়।”
কী এই FAR?
FAR বা ফ্লোর এরিয়া রেশিও হল এমন একটি নিয়ন্ত্রক নীতি, যা জমির আয়তন, লাগোয়া রাস্তাঘাটের প্রস্থ ও অন্যান্য নিয়ম মেনে কতটা নির্মাণ করা যাবে তা নির্ধারণ করে। অনেক সময় বিল্ডাররা প্রথম নির্মাণের সময় কিছু FAR জমা রাখেন, ভবিষ্যতে ব্যবহার করার উদ্দেশ্যে। কিন্তু একবার ফ্ল্যাট হস্তান্তর ও রেজিস্ট্রেশন হয়ে গেলে তা একতরফাভাবে ব্যবহার করা যায় না।
রেজিস্ট্রেশন ও মিউটেশনের গুরুত্ব
কলকাতা পুরসভার এক আধিকারিক জানান, “রেজিস্ট্রেশন মালিকানার প্রমাণ হলেও, মিউটেশনের মাধ্যমে ফ্ল্যাটমালিকের নাম পুরসভার রেকর্ডে অন্তর্ভুক্ত হয়। বিরোধের সময়ে এটি ফ্ল্যাটমালিকের স্বার্থরক্ষা করে।”
স্থপতিরা ব্যাখ্যা করেন, প্রত্যেক রেজিস্টার্ড ফ্ল্যাটমালিকের জমিতে সমান অংশীদারিত্ব থাকে। রেজিস্ট্রেশন ও মিউটেশন হয়ে গেলে বিল্ডার বা আগের জমির মালিক একক মালিকানা হারান। তাই নতুন নির্মাণের জন্য সব সহ-মালিকের কাছ থেকে পওয়ার অব অ্যাটর্নি নিয়ে পুরসভায় নতুন প্ল্যান জমা দিতে হয়।
সব মিলিয়ে, পুরসভার নিয়ম অনুযায়ী, কোনও বহুতল আবাসনে ফ্ল্যাট হস্তান্তর ও রেজিস্ট্রেশনের পরে নতুন নির্মাণ একতরফাভাবে সম্ভব নয়—সবার লিখিত সম্মতি বাধ্যতামূলক।