কলকাতা: দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুর ২ ব্লকের বিদ্যানগর গ্রামের এক বিশেষ ভাবে সক্ষম স্কুলছাত্রী আজ প্রতীকীভাবে ইউনিসেফের পশ্চিমবঙ্গ শাখার প্রধানের পদ বসল। পদে বসে সে শিশুদের মতামতকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছে।
বিশ্ব শিশু দিবস উপলক্ষে ইউনিসেফের “কিডস টেকওভার” কর্মসূচির অংশ হিসেবে, বিদ্যানগর গার্লস হাই স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী রিয়া সরদার এই দায়িত্ব পালন করে।
চেয়ারে বসার পর রিয়া সিদ্ধান্ত নেয় যে ইউনিসেফের কর্মকর্তারা বছরে একবার শিশুদের সঙ্গে বৈঠক করবেন এবং তাদের মতামত শিশু উন্নয়ন কর্মসূচি পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
ভাল ভাবে হাঁটতে পারে না রিয়া। হুইলচেয়ারে চলাফেরা করে। ইউনিসেফের চিফ ড. মঞ্জুর হোসেনের কম্পিউটারের কিবোর্ডে বোতাম ক্লিক করে একটি ইমেল পাঠান। এর ফলে তার সিদ্ধান্ত সকল কর্মকর্তার কাছে পৌঁছে যায়।
রিয়া বলে, “শুরুর দিকে আমাদের স্কুলের টয়লেটে র্যাম্প ছিল না। কিন্তু এখন স্কুল কর্তৃপক্ষের সহায়তায় র্যাম্প তৈরি হয়েছে। আমার বাবার অনুরোধে ক্লাসগুলো স্কুলের নিচতলায় আয়োজন করা হচ্ছে। আমি চাই, আমার মতো প্রতিবন্ধী শিশুদের যেন আর কোনো সমস্যার সম্মুখীন হতে না হয়।”
ইউনিসেফ কর্মকর্তারা প্রতিশ্রুতি দেন যে রিয়ার নেওয়া সিদ্ধান্তগুলি বাস্তবায়িত হবে। শিশুদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে এবং তাদের অধিকার রক্ষায় ‘শোনো আগামীকে’ কমর্সূচির অংশ হিসেবে বার্ষিক সভার আয়োজন করা হবে।
মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে আরেকটি “কিডস টেকওভার” কর্মসূচিতে, চুয়ানপুর বিদ্যানিকেতন গার্লস হাই স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী সৌমিকি চক্রবর্তী স্থানীয় সম্প্রদায়-ভিত্তিক টিভি চ্যানেল ImaginCTv-এর সম্পাদকের চেয়ারে বসে। সে সিদ্ধান্ত নেয়, প্রতি মাসে অন্তত একটি শিশু-সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে খবর সম্প্রচার করা হবে।
ড. মঞ্জুর হোসেন বলেন, “শিশুদের কণ্ঠ আমাদের কাজে অন্তর্ভুক্ত করার এই উদ্যোগ তাদের অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করবে। এর মাধ্যমে আমরা তাদের সমস্যা ও মতামত বুঝতে পারব এবং সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে তাদের অধিকার রক্ষা করতে পারব।”
‘শোনো আগামীকে’, ইউনিসেফ আয়োজিত অনুষ্ঠানে মন্ত্রীর সামনে তাদের সমস্যার কথা তুলে ধরল শিশুরা