ধর্মতলায় অনশন করছেন জনিয়র ডাক্তাররা। তাঁদের অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে, হাসপাতালে নিরাপত্তাও। এরই মধ্যে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে রবিবার সকালে দুষ্কৃতীদের তাণ্ডবের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি অনুযায়ী, ১০-১৫ জন যুবকের একটি দল বাইক নিয়ে হাসপাতালের ভেতরে প্রবেশ করে। তাদের হাতে ছিল হকি স্টিক এবং ক্রিকেট উইকেট ছিল। তারা ট্রমা সেন্টারের এক রোগীর আত্মীয় সৌরভ মোদককে নির্মমভাবে মারধর করে। তাঁর মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে এবং তাঁকে ট্রমা কেয়ারে ভর্তি করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, দুষ্কৃতীরা হাসপাতালে ঢোকার সময় নিরাপত্তা রক্ষীরা ছিলেন, তবে তারা কিছুই করেননি। পুলিশও ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও কার্যত নিষ্ক্রিয় ছিল বলে অভিযোগ। এসএসকেএমের এক জুনিয়র চিকিৎসক বলেন, ‘‘এই তো নিরাপত্তার উদাহরণ! পুলিশ দাঁড়িয়ে থাকলেও কেউ কিছু করতে পারেনি। দুষ্কৃতীরা এসে হামলা চালিয়ে চলে গেল।’’
এখন প্রশ্ন উঠছে, এত বড় একটি সরকারি হাসপাতালে নিরাপত্তা ব্যবস্থার গাফিলতি কেন? সম্প্রতি আরজি কর হাসপাতালের ঘটনা নিয়ে যখন নিরাপত্তা ইস্যুতে আন্দোলন চলছে, তখন এসএসকেএম-এ এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি নিয়ে চিকিৎসক, রোগী ও তাঁদের পরিজনেরা আতঙ্কে রয়েছেন। চিকিৎসকরা আগে থেকেই সরকারি হাসপাতালগুলির সুরক্ষা বাড়ানোর দাবি জানিয়ে আসছেন, এবং সরকার আশ্বাসও দিয়েছিল যে হাসপাতালগুলোতে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো এবং নিরাপত্তা রক্ষীদের সংখ্যা বাড়ানো হবে। কিন্তু রবিবারের এই ঘটনায় সেই পদক্ষেপগুলির যথার্থতা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে।
ট্রমা কেয়ারে সৌরভ মোদকের মাথায় গুরুতর আঘাত লেগেছে। তাঁর সিটি স্ক্যান ও অন্যান্য পরীক্ষা করা হয়েছে এবং আপাতত চিকিৎসা চলছে। তবে এখনও পরিষ্কার নয় কেন এই হামলা ঘটল এবং দুষ্কৃতীদের পরিচয় কী। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুই পক্ষের বিবাদের জেরে এই হামলা হতে পারে। জানা গিয়েছে, হাসপাতালের বাইরে দুই দুষ্কৃতী দলের মধ্যে কোনও ঝামেলা হয়। সেই গন্ডগোলের পর একটি দল হাসপাতালে আসে চিকিৎসা করাতে। অপর দলটি এসে ওই দলের লোকেদের মারধর করতে শুরু করে। বাধা দিতে গেলে সেই সময় হামলার শিকার রোগী আত্মীরাও। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে এবং দুষ্কৃতীদের খোঁজ চালাচ্ছে।
এই ঘটনার পর হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। ইতিমধ্যেই আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ১০ দফা দাবি নিয়ে চিকিৎসকেরা আন্দোলন করছেন এবং হাসপাতালগুলোর সুরক্ষা ব্যবস্থা বাড়ানোর জন্য সরকারের কাছে আহ্বান জানাচ্ছেন। কিন্তু এসএসকেএমের ঘটনার পর সেই দাবির গুরুত্ব আরও বাড়লো।
এবার অসুস্থ হয়ে পড়লেন ডা. অনুষ্টুপ, ভর্তি মেডিক্যাল কলেজে