আরজি কর মেডিকেল কলেজে চলমান আন্দোলন এ বার হয়তো আরও জটিল রূপ নিতে চলেছে। আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের পক্ষ থেকে শনিবার গণকনভেনশন এবং সমাবেশ চলছে। এরই মধ্যে জুনিয়র ডাক্তারদের অন্য একটি গোষ্ঠীর নতুন সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটে গেল একই দিনে।
পশ্চিমবঙ্গের জুনিয়র ডাক্তারদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার প্রেক্ষিতে শুক্রবার রাতে নবগঠিত সংগঠন “ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন” (WBJDA)-এর লোগো প্রকাশ করা হয়েছে। সংগঠনের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, অপপ্রচারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতেই এই নতুন সংগঠন গঠন করা হয়েছে।
শনিবার দুপুরে এক সাংবাদিক বৈঠকে সংগঠনের আহ্বায়ক ও জুনিয়র চিকিৎসক শ্রীশ চক্রবর্তী আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনেন। তিনি বলেন, “আমাদের উপর অন্যায় চলছে। গত ৯ আগস্ট নিয়ে কিছু ব্যক্তি রাজনৈতিক স্বার্থে কর্মবিরতির পথ বেছে নিয়েছিল। আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম কারণ রোগী পরিষেবাই আমাদের আসল লক্ষ্য। আমাদের বয়কট করা হয়েছিল এবং আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ আনা হয়েছিল যে আমরা থ্রেট কালচার চালাচ্ছি। এমনকি আমাদের কলেজে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।”
শ্রীশ চক্রবর্তীর বক্তব্য অনুযায়ী, আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে তাঁদের “ক্রিমিনাল” বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে, যখন অভিযুক্তরা নিজেরাই বিভিন্ন ব্যক্তির নামে টাকা তোলার কাজে লিপ্ত। তাঁর অভিযোগ, “অভয়া দিদির নামে ৪.৭৫ লক্ষ টাকা তোলা হয়েছে। রিয়া বেরার নামেও টাকা তোলা হয়েছে। যারা এ সব করছেন, তাঁরা কি অপরাধী নন? আমাদের কেরিয়ার ধ্বংস করার চেষ্টা করছে। আমরা রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র চিকিৎসকদের আহ্বান জানাচ্ছি, আমাদের সাথে যোগ দিন। আমরা সকলের জন্য আছি এবং যে কোনো বাধার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রস্তুত।”
অন্যদিকে, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে শনিবার একটি গণ কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে আন্দোলনকারী পক্ষ থেকে ‘থ্রেট কালচার’-এর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনে সামনের সারির মুখ কিঞ্জল নন্দ মন্তব্য করেন, “আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে দীর্ঘ ৩-৪ বছর ধরে থ্রেট কালচারের প্রচলন রয়েছে, যা এখনও পর্যন্ত বন্ধ হয়নি। সত্যের পাশে দাঁড়াতে হবে না থ্রেট কালচারের সাথে যেতে হবে, এই প্রশ্ন আমাদের সবার কাছে।”
আন্দোলনকারী ডাক্তার অনিকেত মাহাতোও অভিযোগ করেন, রাজ্য প্রশাসন থ্রেট কালচারের পক্ষে অবস্থান নিচ্ছে। তিনি বলেন, “থ্রেট কালচারকে প্রাধান্য দেওয়া হলে সত্যের পরাজয় ঘটবে, যা আমরা মেনে নেব না।”