শহরের সাংস্কৃতিক পরিচয়ের প্রতীক হিসেবে পরিচিত হলুদ ট্যাক্সি থাকছে কলকাতার রাস্তায়। তবে এই হলুদ ট্যাক্সি আর শুধু অ্যাম্বাসাডর গাড়ি সীমাবদ্ধ নয়। রাজ্য সরকার সম্প্রতি একটি নতুন নিয়ম চালু করেছে, যেখানে সমস্ত লাইট কমার্শিয়াল যানবাহন যেগুলির ট্যাক্সি পারমিট রয়েছে, সেগুলিকে হলুদ রঙে রঙ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
এই নতুন নিয়মটি রাজ্যের পরিবহন সচিব সৌমিত্র মোহন জারি করেন। এর উদ্দেশ্য, শহরের হলুদ ট্যাক্সির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে রক্ষা করা এবং আধুনিক যাত্রী পরিবহন ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তার সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রাখা।
১৯৬২ সালে হিন্দুস্তান মোটরসের অ্যাম্বাসাডর গাড়ি দিয়ে শুরু হওয়া কলকাতার হলুদ ট্যাক্সি, শহরের রাস্তায় দীর্ঘদিন ধরেই পরিচিত দৃশ্য। তবে ২০২৪ সাল নাগাদ এর সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৭,০০০। এর মধ্যে পরিবেশ রক্ষার্থে ১৫ বছরের পরিষেবা সীমার কারণে ৪,৪৯৩টি ট্যাক্সি এই বছরই বসে যাবে। ফলে ২০২৫ সালের শেষে মাত্র ৩,০০০-এর কম হলুদ ট্যাক্সি রাস্তায় থাকবে।
২০০৮ সালের কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে ১৫ বছরের সীমা চালু হয়েছিল। পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণে এই পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে। তাই এর ফলে অ্যাম্বাসাডর গাড়ির বিদায় ঘণ্টা বেজে গিয়েছে। ২০১৪ সালে এই গাড়ির উৎপাদন বন্ধ হয়।
পরিবহন ইতিহাসবিদ সৌরিশ ঘোষ বলেন, “হলুদ ট্যাক্সি কলকাতার পরিচয়ের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই সিদ্ধান্ত সেই ঐতিহ্যকে বজায় রাখার সঙ্গে আধুনিক যাত্রী পরিবহনের চাহিদাকেও পূরণ করবে।”
সরকারের এই উদ্যোগের ফলে নতুন মডেলের গাড়িগুলিও হলুদ রঙে রঙ করার অনুমতি পাবে। এতে কলকাতার ঐতিহ্যবাহী হলুদ ট্যাক্সির উপস্থিতি টিকে থাকবে, যদিও অ্যাম্বাসাডর গাড়ির দিন প্রায় শেষ।