এসআইআর আতঙ্কে জন্ম-মৃত্যু সার্টিফিকেট নেওয়ার ভিড়, কারও যাতে হায়রানি না হয়, ব্যবস্থা নিচ্ছে কলকাতা পুরসভা, আশ্বাস মেয়রের
বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR) প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকেই রাজ্যে জন্ম ও মৃত্যু সনদের চাহিদা কয়েকগুণ বেড়েছে। নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য প্রয়োজনীয় নথি সংগ্রহে হুড়োহুড়ি শুরু হওয়ায় কলকাতা পুরসভার মূল দপ্তরে লম্বা লাইন দেখা যাচ্ছে প্রতিদিন। এই পরিস্থিতিতে মেয়র ফিরহাদ হাকিম আশ্বাস দিয়েছেন, চাহিদা সামলাতে পুরসভা কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে।
শুক্রবার মেয়র বলেন, “এসআইআরের আতঙ্ক একেবারেই অযৌক্তিক। বিজেপি অকারণেই ভয় ছড়াচ্ছে। তৃণমূল কংগ্রেস এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্যে কোনও বৈধ নাগরিকের অধিকার কেউ কেড়ে নিতে পারবে না।”
জন্ম-মৃত্যু সনদের চাহিদায় ভিড়
কলকাতা পুরসভার সদর দপ্তরে গত কয়েকদিন ধরে জন্ম ও মৃত্যু সনদের বিভাগে ভিড় অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। অনেক নাগরিক পুরনো সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে চাইছেন, যা ভোটার তালিকা সংশোধনে প্রমাণ হিসেবে লাগবে বলে ধারণা করছেন তাঁরা।
পুরসভা সূত্রে খবর, এই চাহিদার সুযোগে সক্রিয় হয়ে উঠেছে দালালচক্র, যারা নাগরিকদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগে জড়িত। একাধিক নাগরিক জানিয়েছেন, অনলাইন আবেদন করলেও চ্যাটবট পরিষেবা ধীরগতির কারণে আবেদন সম্পূর্ণ করা যাচ্ছে না।
চ্যাটবট পরিষেবা ও পুরসভার নজরদারি
কোভিড পরবর্তী সময়ে কলকাতা পুরসভার জন্ম-মৃত্যু সনদের আবেদন চ্যাটবট মারফত অনলাইনে করা বাধ্যতামূলক। কিন্তু সম্প্রতি একসঙ্গে বিপুল পরিমাণ আবেদন জমা পড়ায় সার্ভিসটি প্রায় অচল অবস্থায় পৌঁছেছে।
পুরসভার স্বাস্থ্য দপ্তরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “চ্যাটবট পরিষেবায় ভিড় বেড়ে যাওয়ায় পরিষেবা ধীর হচ্ছে। আমরা দিনে যতটা সম্ভব আবেদন গ্রহণের চেষ্টা করছি। মেয়র ও ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ দু’জনেই দপ্তরকে সতর্ক থাকতে বলেছেন যাতে নাগরিকদের কোনও রকম হয়রানি না হয়।”
দালালচক্রের সক্রিয়তা
একজন সিনিয়র পুরকর্মকর্তা জানিয়েছেন, “এসআইআরের পর জন্ম-মৃত্যু সনদের জন্য হুড়োহুড়ির সুযোগ নিয়ে কিছু দালালচক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। আমরা অভিযোগ পাচ্ছি যে আবেদনকারীদের ভয় দেখিয়ে বা বিলম্ব ঘটিয়ে অর্থ আদায় করা হচ্ছে। পুরসভা বিষয়টি নজরে রেখেছে এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
মেয়র ফিরহাদ হাকিম এই পরিস্থিতির জন্য সরাসরি বিজেপিকে দায়ী করে বলেন,
“এসআইআর নিয়ে অকারণ আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে। তার ফলেই নাগরিকরা ভিড় করছেন জন্ম-মৃত্যু সনদের কাউন্টারে। কলকাতা পুরসভা সর্বোচ্চ সতর্কতা নিচ্ছে যাতে কেউ হয়রানির শিকার না হন।”
📰 আমাদের পাশে থাকুন
নিরপেক্ষ ও সাহসী সাংবাদিকতা টিকিয়ে রাখতে খবর অনলাইন আপনার সহায়তা প্রয়োজন। আপনার ছোট্ট অনুদান আমাদের সত্য প্রকাশের পথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।
💠 সহায়তা করুন / Support Us