রবিবার সকালে মহারাষ্ট্রের সিন্ডেভাহী জঙ্গলে চন্দা ফোর্ট-গোন্দিয়া রেলপথে ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হল ১৮ মাসের এক বাঘিনীর। রক্সৌল এক্সপ্রেস দ্রুতগতিতে এসে বাঘিনীর গায়ে ধাক্কা মারে। আঘাতে ট্র্যাকের বাইরে ছিটকে গিয়ে তার মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তার।
চন্দ্রপুর, গড়চিরোলি এবং গোন্দিয়া জেলার গভীর জঙ্গলের মধ্য দিয়ে যাওয়া এই রেলপথ বন্যপ্রাণীদের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। শুধু এই পথেই গত কয়েক বছরে সাতটি বাঘের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
মহারাষ্ট্রে বাঘের মৃত্যু নিয়ে উদ্বেগ
ন্যাশনাল টাইগার কনজারভেশন অথরিটি (NTCA)-র তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারির প্রথম ২০ দিনে সারা দেশে ১৪টি বাঘের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মারা গিয়েছে ৮টি। এই মৃত্যুগুলোর মধ্যে বেশিরভাগই সংরক্ষিত অঞ্চলের বাইরে ঘটেছে। মৃত্যুর কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে শিকার, দুর্ঘটনা এবং সংক্রামক রোগ।
সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের সাহ্যাদ্রি টাইগার রিজার্ভে বাঘের সংখ্যা বাড়লেও, সংরক্ষিত অঞ্চলের বাইরের বাঘদের সুরক্ষা নিয়ে বন দফতরকে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে।
বন্যপ্রাণী সুরক্ষায় করিডোরের প্রয়োজনীয়তা
গোন্দিয়া-বল্লারপুর রেলপথ বাঘ এবং অন্যান্য বন্যপ্রাণীর জন্য প্রাণঘাতী হয়ে উঠেছে। ২০২৩ সালে ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন ট্রাস্ট (WCT) মহারাষ্ট্র বন দফতরকে একটি রিপোর্ট জমা দিয়েছিল। সেখানে এই রেলপথ বরাবর বন্যপ্রাণী করিডোর তৈরির সুপারিশ করা হয়। মধ্যপ্রদেশে এই ধরনের করিডোর কার্যকর ভূমিকা পালন করেছে, যা মহারাষ্ট্রেও দ্রুত প্রয়োগের দাবি তুলেছেন বিশেষজ্ঞরা।
বন দফতরের প্রতিক্রিয়া
মহারাষ্ট্র বন দফতরের প্রধান বন্যপ্রাণী সংরক্ষক বিবেক খাণ্ডেকর বলেন, “সংরক্ষিত অঞ্চলের মধ্যে আমরা বন্যপ্রাণীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করেছি। তবে এর বাইরেও বাঘের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আমাদের আরও উদ্যোগ নিতে হবে। একাধিক অঞ্চল এবং প্রশাসনিক সীমানা অতিক্রম করে একটি বিস্তৃত সংরক্ষণ প্রকল্প প্রয়োজন।”
বাঘ সংরক্ষণে দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপের পাশাপাশি বন্যপ্রাণী করিডোর তৈরির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে বন দফতর এখন উদ্যোগী। তবে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে বাঘ এবং অন্যান্য বন্যপ্রাণীদের জন্য বিপদ আরও বাড়তে পারে।