মুম্বইয়ের পাওয়াই এলাকায় ঘটে গেল এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা। এক ব্যক্তি ২০ জন শিশুকে পণবন্দি করে রাখেন একটি স্টুডিওর ভিতরে। প্রায় এক ঘণ্টা টানা উদ্ধার অভিযান চালায় মুম্বই পুলিশ ও দমকল বাহিনী। অবশেষে সমস্ত শিশুদের নিরাপদে উদ্ধার করা গেলেও, অভিযুক্ত ব্যক্তি রোহিত আর্যের মৃত্যু হয়েছে পুলিশের গুলিতে।
পুলিশ সূত্রে খবর, উদ্ধার অভিযান চলাকালীন পুলিশকে লক্ষ্য করে এয়ারগান চালায় রোহিত। তাকে রুখতে পাল্টা গুলি চালায় পুলিশ। পুলিশের গুলিতে আহত হয় সে। তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান চিকিৎসা চলাকালীন তাঁর মৃত্যু হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে পাওয়াইয়ের RA স্টুডিও থেকে একটি বিপদ সংকেত আসে। জানা যায়, এক ব্যক্তি ভিতরে বহু শিশুকে আটকে রেখেছেন এবং আগুন লাগানোর হুমকি দিচ্ছেন। পুলিশ ও দমকল বাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়।
পাওয়াই থানার সিনিয়র ইন্সপেক্টর জীবন সোনাওয়ানে জানান, “সব শিশুই নিরাপদ। তাঁদের অভিভাবকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত মানসিকভাবে অস্থির ছিলেন বলে মনে হচ্ছে। তাঁকে উদ্ধার করে আটক করা হয়, তবে পরে তাঁর মৃত্যু হয়।”
অভিযুক্ত রোহিত আর্ষ একটি ভিডিও প্রকাশ করেন, যেখানে তিনি বলেন যে, কিছু ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলতে চান। যদি তা না করা হয়, তবে তিনি “সবকিছুতে আগুন লাগাবেন” এবং “নিজে ও শিশুদের ক্ষতি করবেন” বলে হুমকি দেন।
BREAKING:
— The Siasat Daily (@TheSiasatDaily) October 30, 2025
Rohit Arya, a man in Mumbai’s Powai, allegedly held several children hostage and released a video in which he said he wanted to speak with specific people. In the clip he threatened to set the premises ablaze and to harm himself and the children if he was prevented… pic.twitter.com/z7oAiDZkhU
ভিডিওতে আর্ষ দাবি করেন, তাঁর কিছু “অভিযোগ” রয়েছে এবং তিনি একটি “সরল কথোপকথন” করতে চান। তবে তিনি স্পষ্ট করে জানাননি, তাঁর অভিযোগ কার বিরুদ্ধে বা কাদের সঙ্গে কথা বলতে চান।
পরে পুলিশ জানায়, আর্ষ প্রাক্তন মহারাষ্ট্র শিক্ষা মন্ত্রী দীপক কেসারকর-এর সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন। তাঁর দাবি, শিক্ষা দফতরের বিরুদ্ধে কিছু ব্যক্তিগত অভিযোগ ছিল।
পুলিশ বিকেল ৩টা নাগাদ দমকলকে খবর দেয়। ফায়ার ব্রিগেডের স্টেশন অফিসার অভিজিৎ সোনাওয়ানে জানান, “আমরা হাইড্রোলিক যন্ত্র দিয়ে স্টুডিওর জানালার গ্রিল কেটে প্রবেশের পথ তৈরি করি। পুলিশ ভিতরে ঢুকে সমস্ত শিশুকে উদ্ধার করে।”
প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রায় ২০ জন শিশু—ছেলে ও মেয়ে—বয়স আনুমানিক ১৫ বছর, তাঁদের একটি “অডিশন”-এর জন্য ডাকা হয়েছিল। কিন্তু পরে তাঁদের জিম্মি করা হয়।
যৌথ পুলিশ কমিশনার (আইন-শৃঙ্খলা) সত্যনারায়ণ জানান, “স্টুডিওর ভিতরে প্রায় ২০ জন উপস্থিত ছিলেন। অভিযুক্তের কাছে একটি বন্দুকসদৃশ বস্তু ছিল।”
পুলিশ জানিয়েছে, রোহিত আর্ষর মানসিক অবস্থা ও তাঁর উদ্দেশ্য নিয়ে তদন্ত চলছে। তাঁর মৃত্যুর কারণ ও প্রেক্ষিত জানতে ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষা করা হচ্ছে।ঘটনার জেরে বৃহস্পতিবার বিকেলে পাওয়াই এলাকায় চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত এলাকা খালি করে দেন। যদিও প্রশাসনের তৎপরতায় সমস্ত শিশু অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার হয়, তবু এই ঘটনা শহরে নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।
📰 আমাদের পাশে থাকুন
নিরপেক্ষ ও সাহসী সাংবাদিকতা টিকিয়ে রাখতে খবর অনলাইন আপনার সহায়তা প্রয়োজন। আপনার ছোট্ট অনুদান আমাদের সত্য প্রকাশের পথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।
💠 সহায়তা করুন / Support Us